কলকাতা: তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য যে বাংলা, ইতিমধ্যেই বুঝিয়ে দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন বা এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের জবাবে ‘হয়তো ওনার দলের নেতারা আমার দুঃস্বপ্ন দেখছেন, পায়ের তলা থেকে মাটি সরছে, বাংলার মুসলমানরা জবাব দেবেন’-এ ধরনের মন্তব্যে তাঁকে কটাক্ষ করেছেন তিনি। এবার এ রাজ্যে দলের আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ ঘিরে বড়সড় পরিকল্পনা করে ফেলল এআইএমআইএম। সূত্রের খবর, ব্রিগেডে ৮ থেকে ১০ লক্ষ মানুষের সমাগমের মধ্য দিয়ে বাংলায় পথ চলা শুরু করবে তারা। ২০২০-র ১৫ থেকে ২০ জানুয়ারির মধ্যে যে কোনও দিন এই সভা হবে। উপস্থিত থাকবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি ওয়েইসি।
ইতিমধ্যেই তার প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। দলের রাজ্যনেতা জামিরুল হাসান বলেছেন, ওয়েইসি নিজে থাকবেন বলেছেন। আমরা সেনাবাহিনীর কাছে অনুমতি চেয়েছি। ৮-১০ লক্ষ মানুষ আসবেন। তাই আমাদের ব্রিগেড মাঠই দরকার। ওই দিনই আমাদের রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা করা হবে। ওই সভার পর থেকেই আমরা পুরোদমে রাজ্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করে দেব।
সম্প্রতি কোচবিহার থেকে মুর্শিদাবাদে একাধিক সভায় নাম না করে ওয়েইসির দলকে নিয়ে সতর্কবার্তা শোনা গিয়েছে তৃণমূল নেত্রীর গলায়। তাদের হায়দরাবাদ থেকে ‘টাকার থলি’ নিয়ে আসা দল, ‘বিজেপির সবচেয়ে বড় শরিক’ বলে কটাক্ষও করেছেন তিনি। এমনকি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র দফতরের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকেও ওঠে এআইএমআইএম-এর প্রসঙ্গ! শুধু তাই নয়, বীরভূমের মতো জেলায় যেখানে ৩৭ শতাংশ সংখ্যালঘু, সেখানেও গ্রামে গ্রামে উড়তে শুরু করেছে তাদের পতাকা! বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের বৈঠকেও উঠে এসেছে তাদের কথা।
এই প্রেক্ষাপটে এআইএমআইএম-এর দাবি, ২০১৫ সাল থেকে রাজ্যের বুথ স্তরে সংগঠন তৈরির কাজ শুরু হয়। প্রত্যেক জেলাতেই তাদের সংগঠন একেবারে তৈরি। বহু সংখ্যক মানুষ আমাদের সঙ্গে রয়েছেন বলেও দাবি করেছেন জামিরুল।
এদিকে এরাজ্যে আসাদউদ্দিনের দলের অভ্যুত্থানের নেপথ্যে বিজেপি রয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তৃণমূল।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০১১-র পর থেকে রাজ্যের সংখ্যালঘু ভোটের সিংহভাগই গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে।এই অবস্থায় মুসলিম প্রধান এআইএমআইএম যদি এ রাজ্যে ভোটে দাঁড়ায়, তাহলে ভোট কাটাকাটিতে লাভ হবে বিজেপিরই। এই প্রেক্ষাপটে এআইএমআইএম-এর প্রসঙ্গ সুকৌশলে এড়িয়ে গিয়েছে বিজেপি। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেই পারে, আমার কিছু বলার নেই বলেছেন মুকুল রায়। এআইএমআইএম জানিয়েছে,২০২১-এর বিধানসভা তো বটেই, আগামী পুরভোটেও অংশগ্রহণ করবে তারা।