নয়াদিল্লি: কাশ্মীরে জঙ্গি হামলা নিয়ে নতুন করে পারদ চড়ছে। সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখার কথা জানিয়ে পাকিস্তানকে জব্দ করার বার্তা দিয়েছে ভারত। আর সেই আবহেই বন্যা পরিস্থিতির উপক্রম হওয়ার জন্য ভারতের দিকে আঙুল তুলল পাকিস্তান। তাদের অভিযোগ, কিছু না জানিয়েই ঝিলম নদীর জল ছেড়ে দিয়েছে ভারত। (PoK Flood Alert)

ঝিলমের জল ছাড়ার ফলে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মুজফ্ফরাবাদে বন্যার ঝুঁকি দেখা দিয়েছে বলে দাবি সামনে আসছে। পাকিস্তানের দুনিয়া নিউজের দাবি, মুজফ্ফরাবাদের কাছে আচমকাই ঝিলমের জলস্তর বেড়ে গিয়েছে। হাত্তিয়ান বালাতে জল নিয়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। মসজিদ থেকেও ঘোষণা করে সতর্ক করা হয়েছে স্থানীয়দের। (India-Pakistan Conflict)

ঝিলমের পাড়ে অবস্থিত মুজফ্ফরাবাদ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরত্ব হাত্তিয়ান বালার। বন্যা সতর্কতা ঘিরে সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বলে খবর। বলা হচ্ছে, কাশ্মীরের অনন্তনাগ থেকে জল পাক অধিকৃত কাশ্মীরের চাকোঠিতে জলের স্তর বেড়ে গিয়েছে। কিছু না জানিয়ে জল ছেড়ে ভারত আন্তর্জাতিক নীতি এবং জলচুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে দাবি পাকিস্তানের। 

স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আসিফ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, মসজিদ থেকে ঘোষণার পরই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। কারণ নদীর পাড়ে বহু মানুষ বাস করেন। আগে থেকে কিছু বলা হয়নি। জল ধেয়ে আসছে। তাতে সম্পত্তিহানির ভয় পাচ্ছেন স্থানীয়রা। ভারতের তরফে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। 

পহেলগাঁও হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালে স্বাক্ষরিত সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। সীমান্ত সন্ত্রাস নিয়ে পাকিস্তান পদক্ষেপ না করা পর্যন্ত চুক্তি স্থগিত থাকবে বলে জানানো হয়। ওই চুক্তি অনুযায়ী, পূর্বের তিন নদী ইরাবতী, বিপাশা এবং শতদ্রুর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতে। পশ্চিমের তিন নদী, সিন্ধু, ঝিলম এবং চন্দ্রভাগার উৎস ভারত হলেও, তার উপর পাকিস্তানের অধিকার কার্যকর হয়। 

পারস্পরিক সম্পর্কে ওঠাপড়া সত্ত্বেও এতদিন সিন্ধু জল চুক্তি অনুযায়ী দুই দেশের মধ্য়ে বোঝাপড়া কায়েম ছিল। কিন্তু পহেলগাঁও হামলায় পাকিস্তান সংযোগ ধরা পড়ার পর পরিস্থিতি পাল্টে গিয়েছে। ভারত ওই জল চুক্তি স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে পাকিস্তান। কারণ কৃষিকার্যের জন্য পুরোপুরি সিন্ধুর জলের উপর নির্ভরশীল পাকিস্তান। ৯০ শতাংশ সেচকার্যই সেখান থেকে হয়। ফলে জল যাওয়া বন্ধ হলে দেশের অর্থনীতির উপরও প্রভাব ফেলবে। সেই নিয়ে সংঘাত বেড়েই চলেছে।