ইসলামাবাদ: নিরন্তর সেনা-অভিযান চালিয়ে পাকিস্তানের (Pakistan Army) মাটি থেকে সন্ত্রাসের (Terrorism) দৌরাত্ম্য পুরোপুরি নিকেশ করবেন, ঘোষণা সে দেশের সেনাপ্রধান জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনিরের। গত শুক্রবার, পাকিস্তানে জোড়া আত্মঘাতী বিস্ফোরণে (Twin Blast) মারা গিয়েছেন ৬৫ জন। তার পরই এই ঘোষণা পাক সেনাপ্রধানের।
কী বার্তা পাক সেনাপ্রধানের?
শনিবার কোয়েত্তা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন পাক সেনাপ্রধান। সেখানেই তাঁকে হালের সন্ত্রাসবাদী হামলার বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়। পরে জেনারেল সৈয়দ আসিম মুনির বলেন, 'এই জঙ্গি ও তাদের মদতদাতাদের সঙ্গে ধর্ম এবং মতাদর্শের কোনও সম্পর্ক নেই। এরা পাকিস্তান ও পাক নাগরিকের শত্রুপক্ষের প্রতিনিধি।' এর পরেই তাঁর সংযোজন, 'আমাদের জঙ্গিদমন অভিযান নিরন্তর চলতে থাকবে। সন্ত্রাসবাদের দৌরাত্ম্য যত ক্ষণ পর্যন্ত না কমছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা এবং আইন বলবৎকারী সংস্থা এক মুহূর্ত চুপ করে বসবে না।'
গত শুক্রবার বালোচিস্তানে মস্তাঙ্গে পবিত্র ধর্মীয় পরব উপলক্ষ্যে এক মিছিলে আত্মঘাতী বিস্ফোরণে ৬০ জনের মৃত্য়ু হয়, জখম হন আরও ৬০ জন। সেই খবরের ধাক্কা সামলে উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ। দ্বিতীয় বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের হাঙ্গুর একটি পুলিশ স্টেশনের মসজিদে। সেখানে ৫ জনের মৃত্য়ু হয়, জখম হন ১২ জন। বিস্ফোরণের অভিঘাতে মসজিদের ছাদ ভেঙে পড়ে। এখনও পর্যন্ত কোনও জঙ্গিগোষ্ঠীই হামলার দায়স্বীকার করেনি। এমনকি পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গি হামলার নেপথ্যে থাকা, নিষিদ্ধ সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তানও হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার যাবতীয় জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান...
একটি থিঙ্কট্যাঙ্ক সংস্থার হিসেব বলছে, গত ৮ বছরে জঙ্গি হামলার বলি হিসেবে পাক নিরাপত্তাকর্মীদের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। এর মধ্যে চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে অন্তত ৩৮৬ জন পাক নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। Center for Research and Security Studies নামে ওই সংস্থার আরও দাবি, গোটা পাকিস্তান জুড়ে একই মেয়াদে অন্তত ৫৭ শতাংশ হিংসাত্মক ঘটনা বেড়েছে। মূলত বালোচিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোয়া এলাকাতেই এই হিংসাত্মক ঘটনাগুলি ঘটেছে, আরও দাবি তাদের। এই পরিসংখ্যানের প্রেক্ষিতে পাক সেনাপ্রধানের সাম্প্রতিক ঘোষণার আলাদা তাৎপর্য রয়েছে বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
ভারত যদিও দীর্ঘদিন ধরেই মনে করে, জঙ্গিদের নানা ভাবে মদত দিয়ে আসছে পাকিস্তান। এই মদতে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআইয়ের পাশাপাশি সে দেশের সেনাবাহিনীর ভূমিকাও রয়েছে বলে দাবি নয়াদিল্লির। ভারত-বিরোধী সেই জঙ্গি কার্যকলাপই ব্যুমেরাং হয়ে রক্ত ঝরায় পাক মাটিতে, ব্যাখ্যা নয়াদিল্লির। সে দিক থেকে দেখলে পাক সেনাপ্রধানের এই কথার সারবত্তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়, মনে করছেন অনেকে।
আরও পড়ুন:হাতে গ্লাভস পরে নোংরা পরিষ্কার, 'সুস্থ থাকতে' ঝাঁটা হাতে সাফাই অভিযান মোদির