নয়াদিল্লি: নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য একদিন আগেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম সুপারিশ। কিন্তু রাত গড়াতেই বিড়ম্বনা বাড়ল পাকিস্তানের। ইরানে পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে পর পর হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। এমন পরিস্থিতিতে হামলার তীব্র নিন্দা করতে হল ইসলামাবাদকে। উত্তেজনা কমিয়ে পশ্চিম এশিয়ায় শান্তি স্থাপনের পক্ষে সওয়াল করল তারা। ফলে আমেরিকা, না ইরান, কাদের পক্ষ নেবে তারা, সেই প্রশ্নও উঠতে শুরু করেছে। (Iran-Israel War)

পহেলগাঁও হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যেও সংঘাত বাধে। সেই পরিস্থিতিতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মঞ্চে অবতীর্ণ হন। তাঁর হস্তক্ষেপেই ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। ভারত যদিও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের কথা বরাবর অস্বীকার করে আসছে, পাকিস্তান কিন্তু ট্রাম্পের কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে আসছে। এমনকি ট্রাম্পের কূটনীতির প্রশংসাও করে তারা। একদিন আগে ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীতও করে ইসলামাবাদ। (Iran-Israel Conflict)

কিন্তু আমেরিকার যুদ্ধবিমান, সাবমেরিন ইরানে হামলা চালানোর পরই অবস্থান বদল করতে দেখা গেল পাকিস্তানকে। ইরানের পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে আমেরিকা বোমা ফেলার পর সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলে পাক বিদেশমন্ত্রক। বিবৃতি প্রকাশ করে বলা হয়, 'ইজরায়েলের তরফে ধারাবাহিক হামলার পর, আমেরিকা ইরানের পরমাণু কেন্দ্রে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা করছে পাকিস্তান। এতে ওই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়বে বলে আশঙ্কিত আমরা। আবারও বলছি, এই হামলা আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থী এবং রাষ্ট্রপুঞ্জের বিধি অনুযায়ী আত্মরক্ষার পূর্ণ অধিকার আছে ইরানের। ইরানের বিরুদ্ধে এই আগ্রাসন অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। উত্তেজনা আরও বাড়লে ওই অঞ্চল তো বটেই, তার বাইরেও পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। নাগরিকদের জীবন ও সম্পত্তির খাতিরে অবিলম্বে এই সংঘাতে ইতি টানা হোক। আন্তর্জাতিক আইন, বিশেষ করে মানবাধিকার আইন মেনে চলা উচিত সব পক্ষের'।

আমেরিকার যুদ্ধবিমান ও সাবমেরিন ইরানের তিনটি পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি সামনে আসছে। যদিও ইরানের দাবি, কোনও ক্ষয়ক্ষতিই হয়নি তাদের। অনেক আগেই ওই তিন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র খালি করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইরান বনাম ইজরায়েল সংঘাতে আমেরিকার যুক্ত হওয়াকে ভাল চোখে দেখছেন না কূটনীতিকরা। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের সূচনা হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন সকলে।

আর সেই আবহেই আমেরিকার সমালোচনা করল পাকিস্তানও। ইরানের সঙ্গে ৯০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে পাকিস্তানের। ইরানের সঙ্গে বরাবর সুসম্পর্ক ভারতেরও। সরকারি ভাবে দিল্লির তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো না হলেও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূস গয়াল জানিয়েছেন, আলাপ আলোচনা, কূটনীতিক মাধ্যমে সংঘাতের অবসান হোক বলে বরাবর সওয়াল করে আসছেন নরেন্দ্র মোদি। যুদ্ধ কোনও সমাধান নয়।