ইসলামাবাদ: পাকিস্তানের এক আদালত অবিলম্বে বেশ কয়েক বছর আগে মার্কিন সাংবাদিক ড্যানিয়েল পার্লের অপহরণ, খুনের মামলায় ওমর সঈদ শেখের মুক্তির নির্দেশ দিল বৃহস্পতিবার। এই মামলায় দোষী ঘোষিত শেখ ও আরও তিনজনকে আটকে রাখার নির্দেশ অচল, সারবত্তাহীন বলে জানিয়েছে সিন্ধের হাইকোর্ট। হাইকোর্টে পৌরহিত্যকারী বিচারক বলেছেন, কোনও অপরাধ না করেই ১৮ বছর ধরে জেলে পচছে ওরা। যদিও চারজনকে ছেড়ে দিতে বললেও একইসঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশ, ওদের নাম নো ফ্লাই লিস্টে তুলতে হবে অর্থাত্ ওরা পাকিস্তান ছেড়ে বেরতে পারবে না।
কে এই ওমর শেখ? ১৯৯৯ সালে কান্দাহার বিমান ছিনতাই কাণ্ডে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট আইসি-৮১৪র পণবন্দি যাত্রীদের মুক্তির বিনিময়ে ভারত যে তিন সন্ত্রাসবাদীকে ছিনতাইকারীদের হাতে তুলে দিয়েছিল, তাদের অন্যতম সে। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক শেখের সঙ্গেই ছাড়া পেয়েছিল জয়েশ-ই-মহম্মদের প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ আজহার মুস্তাক আহমেদ জারগার।
ওমর শেখ, ফাহাদ নাসিম, শেখ আদিল ও সলমন সাকিবকে পার্ল হত্যায় দোষী সাব্যস্ত ও সাজা ঘোষণার ১৮ বছর বাদে গত এপ্রিলে হাইকোর্ট তাদের আবেদন শুনে শেখ, সাকিব ও নাসিমকে রেহাই দেয়। শেখের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে সাত বছর কারাবাস ও ২০ লক্ষ টাকা জরিমানা করে আদালত। মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার অপেক্ষায় ১৮ বছর কাটিয়ে ফেলেছে সে। অপহরণের দায়ে পাওয়া সাত বছর কারাবাসের সাজাও তার মধ্যে ধরা হয়েছে। কিন্তু ফেডেরাল সরকার ৯০ দিনের নিবর্তনমূলক আটক রাখার নির্দেশ জারি করে, যার আওতায় চারজনকেই হেফাজতে বন্দি থাকতে হয়। প্রথম বিজ্ঞপ্তিটি জারি করা হয় যেদিন তারা রেহাই পায়, দ্বিতীয়টি জারি হয় তিন মাস পর, তাদের প্রাথমিক আটক থাকার মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর। ফেডেরাল সরকার এবার কী পদক্ষেপ করবে, তা স্পষ্ট নয়, যদিও তারা অতীতে তারা শেখ ও বাকি অভিযুক্তদের মুক্তির বিরোধিতা করে।
প্রসঙ্গত, ৩৮ বছর বয়সি ড্য়ানিয়েল পার্লকে যখন ২০০২ এর জানুয়ারি করাচিতে অপহরণ করে খুন করা হয়, তখন তিনি দি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরো চিফ হিসাবে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে ‘শু বম্বার’ তকমাপ্রাপ্ত রিচার্ড সি রিডের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছিলেন। ২০০১ সালে প্যারিস থেকে মিয়ামিগামী একটি ফ্লাইট বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিল রিড।