কলকাতা: ১৯১৮ সালে বিশ্বভারতীর ভিত্তি প্রতিষ্ঠা হলেও, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়েছিল ১৯২১-এ। বৃহস্পতিবার এই ঐতিহ্যশালী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পা দিল একশো বছরে।


কিন্তু, সেই অনুষ্ঠানেও ঢুকে পড়ল রাজনীতি। মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ ঘিরে মাথাচাড়া দিল বিতর্ক।


বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল বক্তৃতা দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।


কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, বিশ্বভারতীর অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি। এদিন নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি বলেন, আজকের যে অনুষ্ঠান হয়েছে, কোনও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। নো ফোন, নো আমন্ত্রণ, কিছুই জানানো হয়নি আমাকে। এটা বিজেপির অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী যখন এসেছিল, আমাকে ইনভাইট করা হয়েছিল। এটা আসলে বিজেপির ইভেন্ট।


যদিও, এই অভিযোগ মানতে নারাজ রাজ্যপাল। জগদীপ ধনকড় বলেন, এই তথ্য ঠিক নয়। ভাল করে খোঁজ নিয়ে দেখুন পেয়েছেন কি না। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান তথা এরাজ্যের সহ পর্যবেক্ষক অমিত মালব্য একটি চিঠির ছবি ট্যুইট করেছেন। যেখানে দেখা যাচ্ছে, চিঠিতে তারিখ ৪ ডিসেম্বর।


সাবজেক্টের জায়গায় লেখা - ২৪ ডিসেম্বর বিশ্বভারতীর প্রতিষ্ঠা দিবসে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ। চিঠির নীচে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্ড বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সই।





এই চিঠির ছবি দিয়ে অমিত মালব্য ট্যুইটারে লিখেছেন, ৪ ডিসেম্বর বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু, পিসির কাছে গুরুদেব ঠাকুরের ঐতিহ্যের থেকেও রাজনীতি বড়! কোনও মুখ্যমন্ত্রী ঠাকুরের বিশ্বভারতীকে এরকম অপমান করেননি। সংকীর্ণ মানসিকতার প্রতীক পিসি বাংলাকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন।


যদিও, অমিত মালব্যর ট্যুইট করা এই চিঠি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, সেই চিঠির কোনও প্রাপ্তি স্বীকার করা হয়েছিল কি? ওই চিঠির প্রাপ্তি স্বীকারের নথি আছে কি? উপাচার্য নিজেই সই করে নিজের কাছে ওই চিঠি রেখে দিয়েছিলেন না কি?


বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং অন্য আধিকারিকরা অবশ্য এনিয়ে কিছু বলতে চাননি। বিশ্বভারতীর শতবর্ষ উপলক্ষ্যে এদিন সকালে মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইটারে লেখেন, "বিশ্বসাথে যোগে যেথায় বিহারো, সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারো..."





বিশ্বভারতী একশো বছরে পা দিল। আদর্শ মানুষ তৈরির জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সবথেকে বড় গবেষণা ছিল এই শিক্ষার মন্দির। এক মহান দার্শনিকের দর্শন এবং দূরদৃষ্টির ফসলকে আমাদের রক্ষা করতেই হবে।


বৃহস্পতিবার কবিগুরুর সাধের প্রতিষ্ঠান পা দিল একশো বছরে। কিন্তু, সেই অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ ঘিরে তৈরি হল রাজনৈতিক বিতর্ক।