নয়াদিল্লি : ভারতীয় এয়ারলাইন্সের জন্য আকাশপথ বন্ধ করার জ্বালা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে পাকিস্তান। দুই মাসের বেশি সময় ধরে আকাশপথ বন্ধ রাখার ফলে ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৩৫ হাজার ৯৯৫ কোটি ৮১ লক্ষ ৬৩ হাজার ৩০০ টাকা ক্ষতি হয়েছে তাদের। সরকারি নথিতে এমনই প্রকাশ।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ২৬ জন নিরীহ মানুষকে বেছে বেছে খুন করা হয়। সেই ঘটনার পর ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের উড়ানের আকাশপথ বন্ধ ঘোষণা করে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জবাবে ভারত পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়। ৭ মে ভারত অপারেশন সিঁদুর চালিয়ে এই আঘাত হানে। তার পরবর্তী চারদিনে দুই দেশের সম্পর্কের চরম অবনতি হয়। কার্যত জোরদার যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছিল। সেই আবহে আকাশসীমা বন্ধ রাখার মেয়াদ বাড়ানো হয়।
পাকিস্তানের দৈনিক 'ডন' সূত্রের খবর, শুক্রবার জাতীয় পরিষদে প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে যে ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেওয়ার ফলে পাকিস্তান বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ৪.১ বিলিয়ন ক্ষতি হয়েছে। মন্ত্রক জানিয়েছে, ২৪ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত রাজস্ব ঘাটতির কারণ অতিরিক্ত রাজস্ব আদায়। প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের আকাশসীমা ভারতীয় বিমান সংস্থা এবং বিমান ছাড়া সকলের জন্য খোলা। একইভাবে, পাকিস্তানি বিমান সংস্থাগুলির ভারতীয় আকাশসীমায় প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার পর ভারতের জোরাল প্রত্যাঘাতে কার্যত সংঘর্ষবিরতি করতে বাধ্য হয় পাকিস্তান। ভেতরের সেই জ্বালা বারে বারে প্রকাশ করে ফেলছে পাকিস্তান। সম্প্রতি পাকিস্তানের চিফ অফ আর্মি স্টাফ ফিল্ড মার্শাল সৈয়দ আসিম মুনির দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন। যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ভারত। পাকিস্তানের দৈনিক 'ডন' অনুযায়ী, ফ্লোরিডার টাম্পায় পাকিস্তানি-আমেরিকান সম্প্রদায়ের সদস্যদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত একটি অনুষ্ঠানে মুনির বলেন, "আমরা ভারতের বাঁধ নির্মাণের জন্য অপেক্ষা করব, আর যখন তারা তা করবে, আমরা তা ধ্বংস করব... সিন্ধু নদী ভারতীয়দের পারিবারিক সম্পত্তি নয়। নদী থামানোর ভারতীয় পরিকল্পনা বাতিল করার জন্য আমাদের সম্পদের কোনও অভাব নেই।"
মুনিরের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তীব্র নিন্দা জানিয়ে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে বিবৃতি জারি করা হয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে পাকিস্তানি চিফ অফ আর্মি স্টাফের করা মন্তব্যের প্রতি আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ হয়েছে। পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার পাকিস্তানের মূলধন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই ধরনের মন্তব্যের মধ্যে থাকা দায়িত্বহীনতার উপর নিজস্ব সিদ্ধান্তে আসতে পারে, যা এমন একটি রাষ্ট্রে পারমাণবিক কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণের অখণ্ডতা সম্পর্কে সুপ্রতিষ্ঠিত সন্দেহগুলিকে আরও জোরদার করে যেখানে সামরিক বাহিনী জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।