করাচি: একবিংশ শতাব্দীতে এসে এই ঘটনাকে কী আখ্যা দেওয়া যায়? মর্মান্তিক, বর্বর না কি নৃশংস? উত্তর নেই পুলিশের কাছেও। একটি ফোন কল পেয়ে যখন ফ্ল্যাট খুলে ঢুকলেন পুলিশ অফিসাররা, মুহূর্তে তাঁদের শিরদাঁড়া দিয়ে নেমেছিল ঠান্ডা স্রোত! সারা ঘরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেহাংশ, রক্তের ছোপ অথচ ঘরে ঘুমিয়ে রয়েছেন এক মহিলা। নির্বিকার, নিশ্চুপ, নিদ্রিত।
এই ঘটনাটি ঘটেছে পাকিস্তানের করাচিতে। পুলিশ জানিয়েছে এক ৭০ বছর বয়সি ব্যক্তির দেহ তাঁরা দেখতে পান করাচির একটি পুরোনো অ্যাপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের একটি ফ্ল্যাটে গিয়ে। শুক্রবার পাকিস্তানের পুলিশ আধিকারিক বলেন, "আমরা একটি ফোন পাই। এরপর আমাদের পুলিশ বাহিনী ওই ফ্ল্যাটে যায়। সেখানে ফ্ল্যাটটি খুললে তারা দেখতে পায় মহিলা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। অথচ সেই ঘরে এবং গোটা ফ্ল্যাটজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েচ রয়েছে ওই ব্যক্তির দেহাংশ।"
সিনিয়র পুলিশ অফিসার জুবায়ের নাজির শেখ জানান, এই ঘটনায় ঘরে 'ঘুমন্ত' স্ত্রীকেই প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ৪৫ বছর বয়সি ওই মহিলা কীভাবে এই ঘটনার পরও ঘুমিয়ে ছিলেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও সুরক্ষার খাতিরে ওই মহিলার নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ। তাঁকে এই মামলার প্রধান সন্দেহভাজন হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে এখনও এই খুনের বিষয়ে কিছু বিস্তারিত জানা যায়নি।
জুবায়ের শেখ বলেন, "মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে কারণ আমরা তাঁর রক্তমাখা কাপড় এবং দেহ টুকরো টুকরো করার সরঞ্জাম সহ একাধিক প্রমাণ পেয়েছি।" পুলিশের দল অপরাধস্থলে একটি ছুরি, একটি হাতুড়ি এবং অন্যান্য ভোঁতা ধাতব যন্ত্র খুঁজে পেয়েছে।
পুলিশ অফিসারের কথায়, ওই মহিলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা যায় যে নিহত ব্যক্তি হলেন তাঁর স্বামী, নাম- মহম্মদ সোহেল। যদিও বিয়ের কথা অস্বীকার করে পরবর্তী জেরায়। মহিলা পরে দাবি করেন মৃত ব্যক্তি তাঁর জামাইবাবু। পাকিস্তানের ডন পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই মহিলাকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে, সন্দেহ করা হচ্ছে কোনও ওষুধের প্রভাব রয়েছে তাঁর শরীরে।
কিন্তু পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের সময় একজন ঠান্ডা মাথার খুনীর মতই নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে শান্তভাবে জবাব দিয়ে চলেছেন মহিলা। প্রতিবেশিদের দাবি অভিযুক্ত মহিলা ও মৃত ব্যক্তি লিভ ইন করতেন এবং টাকাপয়সা নিয়ে প্রায়শই ঝগড়া লেগে থাকত দুজনের মধ্যে। তবে এই মৃত্যু নিয়ে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে পুলিশ।