লাহোর: কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানের এক বিরোধী সাংসদ ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুলেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন যে, সৌজন্য নয়, ভারতের প্রত্যাঘাতের ভয়েই অভিনন্দনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল পাক সরকার। তিনি বলেছিলেন, গত বছর একটি বৈঠকে যখন অভিনন্দনের বিষয়টি নিয়ে কথা বলছিলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি, তখন তাঁর হাঁটু কাঁপছিল। পাক বিদেশমন্ত্রী বলেছিলেন, অভিনন্দনকে ফিরিয়ে দেওয়া না হলে ভারত আক্রমণ করবে।
প্রাক্তন স্পিকার ও পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) সর্দার আয়াজ সাদিক গত বুধবার পাক পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বুধবার এ কথা ফাঁস করেছিলেন। সাদিক একটা সময় পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত ছিলেন।
অভিনন্দনের ঘটনায় এই মন্তব্যের জেরে এবার সর্দার আয়াজ সাদিকের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করার কথা বিবেচনা করছে পাক সরকার।
বুধবার ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সর্দার সাদিক আয়াজ জানিয়েছিলেন, ওই ঘটনার পর একটি বৈঠকে পিএমএল-এন ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) সহ সংসদীয় নেতারা হাজির ছিলেন। সেই বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বলেছিলেন, 'হাঁটু কাঁপছিল, কপালে ছিল ঘাম, বিদেশমন্ত্রী (কুরেশি) আমাদের বলেন, ওপরওয়ালার দোহাই, তাঁকে (অভিনন্দন) ফিরে যেতে দেওয়া হোক। কারণ, তা না হলে ভারত রাত নয়টার সময় পাকিস্তান আক্রমণ করবে'। আয়াজ ইমরান সরকারকে আক্রমণ করে আরও দাবি করেন, 'ভারতের আক্রমণের পরিকল্পনা ছিল না....ওরা ভারতের সামনে মাথা ঝুঁকিয়ে অভিনন্দনকে ফেরত পাঠিয়েছিল'।
সাদিকের এই মন্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে পাক অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী ইজাজ শাহ বলেছেন, সাদিকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে প্রচুর অভিযোগ জমা পড়েছে। সরকার এক্ষেত্রে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়েরের কথা বিবেচনা করছে। মন্ত্রী আরও বলেছেন, যাঁরা ভারত ভক্ত, তারা অমৃতসরে চলে যেতে পারে।
সাদিকের নির্বাচনী ক্ষেত্রতেও তাঁর সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও অভিনন্দনের ছবি সম্বলিত পোস্টার সামনে এসেছে।
পাক সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্যের পর থেকে নিশানায় এসেছেন সাদিক। শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী, ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কম্যান্ডারের সঙ্গে তাঁর ছবি সম্বলিত পোস্টার লাহোরের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যায়। পোস্টারগুলিতে তাঁকে 'বিশ্বাসঘাতক' হিসেবে মন্তব্য করা হয়েছে। ন্যাশন্যাল অ্যাসেম্বলির প্রাক্তন স্পিকারের ছবি সহ এই পোস্টার সামনে আসতেই তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। কিছু কিছু পোস্টারে সাদিকের মুখ বিকৃত করে অভিনন্দনের মতো করা হয়েছে। পোস্টারে লেখা হয়েছে, 'মির সাদিক, মিরজাফর...আয়াজ সাদিক'।
অন্যদিকে, পিএমএল-এন সাদিকের বিরুদ্ধে সরকারের উদ্যোগের তীব্র বিরোধিতা করেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামা হামলার জবাব দিতে পাকিস্তানের খাইবার-পাখতুনখোয়া প্রদেশের বালাকোট শহরের অদূরে জঙ্গি শিবিরে অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান। এর পাল্টা হিসেবে ফেব্রুয়ারি ভারতের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে হামলা চালায় পাক বায়ুসেনা। সে সময় হামলাকারী এফ-১৬ বিমানের পিছু ধাওয়া করেন উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। নিজের মিগ-২১ বাইসন যুদ্ধবিমান নিয়ে আকাশসীমা পেরিয়ে ঢুকে পড়েন পাক অধিকৃত কাশ্মীরে। এর পরে আহত অবস্থায় পাক সেনার হাতে বন্দি হন তিনি। পরে তাঁকে ছেড়ে দেয় পাকিস্তান।
Election Results 2024
(Source: ECI/ABP News/ABP Majha)
অভিনন্দনকে ফেরত পাঠনোর সত্য ফাঁস, ‘বিশ্বাসঘাতক’ পোস্টার, পাক বিরোধী নেতার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা?
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Updated at:
02 Nov 2020 04:30 PM (IST)
কয়েকদিন আগেই পাকিস্তানের এক বিরোধী সাংসদ ভারতীয় পাইলট অভিনন্দন বর্তমানকে ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুলেছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন যে, সৌজন্য নয়, ভারতের প্রত্যাঘাতের ভয়েই অভিনন্দনকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল পাক সরকার। গত বছর একটি বৈঠকে যখন অভিনন্দনের বিষয়টি নিয়ে কথা বলছিলেন পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মহম্মদ কুরেশি, তখন তাঁর হাঁটু কাঁপছিল। পাক বিদেশমন্ত্রী বলেছিলেন, অভিনন্দনকে ফিরিয়ে দেওয়া না হলে ভারত আক্রমণ করবে।
Image: Twitter/@Defence_Pak
NEXT
PREV
খবর (news) লেটেস্ট খবর এবং আপডেট জানার জন্য দেখুন এবিপি লাইভ। ব্রেকিং নিউজ এবং ডেইলি শিরোনাম দেখতে চোখ রাখুন এবিপি আনন্দ লাইভ টিভিতে ।
- - - - - - - - - Advertisement - - - - - - - - -