লাহৌর: স্বেচ্ছায় নির্বাসনে রয়েছেন বিগত সাড়ে তিন বছর ধরে। এবার কি পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন ঘটছে তাঁর? দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফকে (Nawaz Sharif) ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা। কারণ দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী, নওয়াজের ভাই শেহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif) খোদই দাদাকে স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে দেশে ফিরতে আহ্বান জানিয়েছেন। তাই পাক রাজনীতিতে ফের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজের প্রত্যাবর্তন ঘটতে পারে বলে শুরু হয়েছে জল্পনা (Pakistan News)। 


নওয়াজের অনুপস্থিতিতে পর পর চার বার পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের সভাপতি ঘোষিত হয়েছেন শেহবাজ। কিন্তু শুক্রবার শেহবাজ জানান, দলের তাঁর এই পদ সাময়িক। নওয়াজ দেশে ফিরলে তাঁকে পদ ফিরিয়ে দেবেন তিনি। তবে শুধু দলীয় পদই নয়, নওয়াজের প্রত্যাবর্তনে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিও শেহবাজ ছেড়ে দিতে পারেন বলে জোর পেয়েছে জল্পনা। 


এই জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়েছেন খোদ শেহবাজই। তাঁর বক্তব্য, "বিদেশ থেকে ফিরে আসবেন নওয়াজ শরিফ। চতুর্থ বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেশকে ফের উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবেন তিনি।" দলের অভ্যন্তরীণ পরিষদীয় বৈঠকে শেহবাজ এমন মন্তব্য করেন বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর। 


আরও পড়ুন: Ariaha Shah: মাথায়, যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন, জার্মানিতে সন্তানের উপর অধিকার হারালেন ভারতীয় দম্পতি


পাক সংবাদমাধ্যমের দাবি, পরিষদী দলের বৈঠকে ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন খোদ নওয়াজ। পাকিস্তান থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন শেহবাজ। সেখানে চতুর্থ বারের জন্য দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন শেহবাজ। নওয়াজ-কন্যা মরিয়ম সহ-সভাপতি নিযুক্ত হয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মেনে, দলের প্রতীকী চিহ্ন ধরে রাখতেই এই নির্বাচন সম্পন্ন হল। 


উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে স্বাস্থ্যজনিত কারণ দেখিয়ে স্বেচ্ছায় নির্বাসনে রয়েছেন নওয়াজ। ২০২৭ সালে পানামা দুর্নীতিতে নাম জড়ায় তাঁর। করফাঁকি দিয়ে কোটি কোটি টাকা বিদেশের বিভিন্ন সংস্থায় বিনিয়োগের অভিযোগ ওঠে। তার জেরে ২০১৮ সালে পাক সুপ্রিম কোর্ট নওয়াজকে ১০ বছরের সাজা শোনায়। তিনি জীবনে আর কখনও সরকারি পদে অধিষ্ঠিত হবতে পারবেন না বলে নির্দেশ দেয়। কোনও রাজনৈতিক দলের মাথায় থাকতে পারবেন না বলেও জানানো হয়। এর পর জামিন নিয়ে লন্ডনে চিকিৎসা করাতে যান। তার পর জামিনের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও, আর দেশে ফেরেননি নওয়াজ। সেখানেই স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটাচ্ছেন। 


এর আগেও, এক দশকের বেশি সময় নির্বাসনে কাটিয়েছেন নওয়াজ। ২০১১ সালে ফের পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন ঘটান এবং সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০২২ সালের এপ্রিল মাসে ইমরান খানকে সরিয়ে শেহবাজ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই নওয়াজের প্রত্যাবর্তন নিয়ে জল্পনা শুরু হয়। কারণ রাজনৈতিক পরিবার থেকে এলেও, বরাবর দাদার ছত্রছায়াতেই কাজ করেছেন শেহবাজ। সামলেছেন পারিবারিক ব্যবসা। তাই তিনি আদৌ পদ ধরে রাখবেন, নাকি দাদাকে ফেরানোর চেষ্টা করবেন, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল গোড়া থেকেই। 


এতি সম্প্রতিই যদিও এ নিয়ে সক্রিয়তা লক্ষ্য করা যায়। নওয়াজ সরকারি পদে থাকতে পারবে না বলে যে নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট, সম্প্রতিই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি সুপ্রিম কোর্টের সেই রায় পুনর্বিবেচনায় অনুমোদন দেন। ফলে ৬০ দিনের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে পারবেন নওয়াজ।