রাজর্ষি দত্তগুপ্ত, কলকাতা: কলকাতায় ধৃত প্রশিক্ষিত পাক জঙ্গির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সোমবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক তার যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা ঘোষণা করেছেন। 
২০০৯-এর ১৯ মার্চ রাত দুটো নাগাদ কলকাতা পুলিশের এসটিএফ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শাহবাজ ইসমাইল নামে ২৭ বছরের পাকিস্তানি নাগরিককে পাকড়াও করেছিল। শাহবাজ প্রশিক্ষিত পাক জঙ্গি, আল বদর জঙ্গি গোষ্ঠীর সদস্য। ফেয়ারলি প্লেস থেকে শ্রীনগর যাওয়ার টিকিট কাটার সময় গোয়েন্দারা ধরে ফেলেন শাহবাজকে। মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা মহম্মদ জামাল নাম পরিচয় নিয়ে কলকাতায় ঘুরছিল শাহবাজ। জাল ড্রাইভিং লাইসেন্স, জাল ভোটার কার্ড, বাংলাদেশের সিম কার্ড সহ একটি মোবাইল ফোন, বিস্ফোরক জাতীয় কিছু সামগ্রী, অনেক নাম ও ফোন নম্বর লেখা একটি পকেট ডায়েরি, যাতে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অনেকের নাম ও ফোন নম্বর লেখা ছিল। সেইসঙ্গে ছিল আইইডি কীভাবে তৈরি করতে হয়, সেই সংক্রান্ত তথ্যও শাহবাজের কাছ থেকে বাজেয়াপ্ত করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও জালিয়াতি সহ একাধিক ধারায় হেয়ার স্ট্রিট থানায়  পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় রুজু করে। 
তদন্তে নেমে ফরেন্সিক রিপোর্ট এলে জানা যায় যে, ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার বিস্ফোরক জাতীয় সামগ্রী আসলে ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ও পেট্রোলিয়াম হাইকার্বোনেটের সংমিশ্রণ। আরও জানা যায়, শাহবাজ মুজ্জাফরাবাদের একটি প্রশিক্ষণ শিবিরে জঙ্গি হওয়ার ট্রেনিং নেয় ২০০৭-এ। তাকে প্রশিক্ষণ দেয় হরকত-উল-মুজাহিদিনের জঙ্গিরা। একে ৪৭, পিস্তল, রকেট লঞ্চার, হ্যান্ড গ্রেনেড ব্যবহারে সে দক্ষ এবং আরডিএক্স, টিএনটি জাতীয় বিস্ফোরক ব্যবহারেও সিদ্ধহস্ত সে। আল বদরের রওয়ালপিন্ডির অফিস, করাচি অফিসে যাতায়াত ছিল শাহবাজের। 
দীর্ঘদিন বিচার প্রক্রিয়া চলার পর সোমবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক সৌগত রায়চৌধুরী শাহবাজকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।