নয়াদিল্লি : পাকিস্তানি সেনাবাহিনী গোপনে একটি পারমাণবিক-সমৃদ্ধ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (ICBM) তৈরি করছে যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। ওয়াশিংটনের গোয়েন্দা সংস্থাগুলি সূত্রের এমনই খবর। ভারতের 'অপারেশন সিঁদুরের' পর চিনের সহায়তা নিয়ে পাকিস্তান নিজেদের পারমাণবিক অস্ত্রাগারের মানোন্নয়ন করতে চাইছে বলে জল্পনার মধ্যেই 'Foreign Affairs'-এর এই রিপোর্ট সামনে এল।
আমেরিকার আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে রিপোর্ট বলা হয়েছে, 'যদি পাকিস্তানের হাতে এই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র আসে, তাহলে ওয়াশিংটন দেশটিকে পারমাণবিক প্রতিপক্ষ হিসেবে ঘোষণা করবে। যে কোনও পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য হুমকি বা প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করে, তাকে পারমাণবিক প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখা হয়। বর্তমানে, রাশিয়া, চিন এবং উত্তর কোরিয়াকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আমেরিকার সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কথায়, "যদি পাকিস্তানের কাছে ICBM (intercontinental ballistic missile) থাকে, তাহলে তাদের পারমাণবিক প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা ছাড়া আর কোনও উপায় থাকবে না ওয়াশিংটনের। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে এমন ICBM আছে, এমন অন্য কোনও দেশকে বন্ধু হিসেবে বিবেচনা করা হবে না।"
পাকিস্তান সবসময় দাবি করে আসছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল ভারতকে ঠেকানোর জন্যই। এই মুহূর্তে তাদের নীতি স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির উপর নজর দিয়েছে। আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (ICBM), যা পারমাণবিক এবং প্রচলিত উভয় ধরনের যুদ্ধাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত হতে পারে, ৫,৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হবে। বর্তমানে পাকিস্তানের কাছে কোনও ICBM নেই। ২০২২ সালে, পাকিস্তান ভূপৃষ্ঠ থেকে ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত নিক্ষেপযোগ্য মাঝারি-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র Shaheen-III পরীক্ষা করে, যা ২,৭০০ কিলোমিটারেরও বেশি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে, যাতে বেশ কয়েকটি ভারতীয় শহর এর পরিসরের আওতায় আসে।
বিষয়টি গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছে আমেরিকা। গত বছর, ওয়াশিংটন পাকিস্তানের দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক-ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সঙ্গে সম্পর্কিত নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির তত্ত্বাবধানকারী সরকারি মালিকানাধীন প্রতিরক্ষা সংস্থা ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট কমপ্লেক্স এবং আরও তিনটি সংস্থার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। পাকিস্তান এই পদক্ষেপকে "পক্ষপাতদুষ্ট" বলে অভিহিত করলেও, আমেরিকার পদক্ষেপ স্টেট ডিপার্টমেন্টের একটি তথ্যপত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে যেখানে বলা হয়েছে যে, ইসলামাবাদ তার দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক-ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির জন্য উপাদান সংগ্রহ করতে চেয়েছিল।