ইসলামাবাদ: সন্ত্রাসে অর্থসাহায্যের মামলায় লস্কর-ই-তৈবা তথা জামাত-উদ-দাওয়া প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ মহম্মদ সঈদের শ্যালক আবদুল রহমান মাক্কি সমেত তার তিন নেতাকে দোষী ঘোষণা করে ১৮ মাস থেকে ১৬ বছরের বেশি কারাদণ্ড দিল পাকিস্তানের সন্ত্রাস দমন আদালত। মাক্কি ছাড়া বাকিরা হল মালিক জাফর ইকবাল, হাফিজ আবদুল সালাম বুত্তাভি।
পাক মিডিয়ার খবর, লাহোরের সন্ত্রাস দমন আদালতের বিচারক এজাজ আহমেদ বুত্তার যৌথভাবে ইকবাল, বুত্তাভির সাড়ে ১৬ বছরের কারাদণ্ড ঘোষণা করেছেন। দেড় বছর জেল হয়েছে মাক্কির। এছাড়া ইকবাল, বুত্তাভির ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা, মাক্কির ২০ হাজার টাকা জরিমানাও হয়েছে। পাক বিদেশমন্ত্রক ১৮ আগস্ট কয়েকশো সন্ত্রাসবাদী ও ৯৩টি জঙ্গি সংগঠনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে যে দুটি বিধিবদ্ধ নিয়ন্ত্রণমূলক আদেশ জারি করে, তার একটিতে নাম ছিল ইকবাল, বুত্তাভির। তাতে ইকবালকে লস্করের সিনিয়র নেতা তথা সহযোগী প্রতিষ্ঠাতা হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, সে লস্কর, জামাতের একাধিক শীর্ষ পদে বহাল ছিল। বলা হয়েছে, ২০১০ –এও ইকবাল ছিল লস্কর, জামাতের অর্থ দপ্তরের ইনচার্জ, তার শিক্ষা দপ্তরের ডিরেক্টর ও মেডিকেল শাখার প্রেসিডেন্ট। বুত্তাভিকে লস্করের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, হাফিজের সহকারী বলে উল্লেখ করা হয়েছে।


মাক্কিকে ২০১০ সালে সন্ত্রাসবাদী বলে উল্লেখ করে মার্কিন ট্রেজারি শাখা, তার ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মাথার দাম ঘোষণা করে। তবে তার বিরুদ্ধে এখনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি রাষ্ট্রপুঞ্জ। লস্করের রাজনৈতিক ও বৈদেশিক বিষয় সংক্রান্ত শাখার মাথায় ছিল সে। সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীটির হয়ে তহবিল সংগ্রহে বড় ভূমিকা ছিল তার।
তিনজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেছিল পঞ্জাব প্রদেশের সন্ত্রাস দমন শাখা। ১৯৯৭এর সন্ত্রাস দমন আইনের নানা ধারায় অভিযুক্ত করা হয় তাদের। গত ফেব্রুয়ারিতে সঈদ, তার এক সহযোগী-দুজনেরই দুটি সন্ত্রাসে অর্থ দেওয়ার মামলায় সাড়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড হয়।
সাম্প্রতিক মামলায় বাদী পক্ষ দাবি করে, ওই তিনজন বেহারি জেলায় নিষিদ্ধ সংগঠন আল-হামাদ ট্রাস্টের নামে নথিভুক্ত একটি সম্পত্তি কাজে লাগিয়ে সন্ত্রাসবাদে জোগান দেওয়ার অর্থ তুলছিল। ওই সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে নেওয়া উচিত বলে অভিমত জানিয়েছে আদালত।
পঞ্জাব প্রদেশের বিভিন্ন শহরে জামাত নেতাদের নামে ২৩টি এফআইআর দায়ের করেছিল সন্ত্রাসবাদ দমন শাখা।
ভারত অবশ্য বরাবরই লস্কর, জামাত, জয়েশের মতো সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এখনও পর্যন্ত গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে সন্দিহান। অক্টোবরে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ) পাকিস্তানের সন্রাস সে অর্থ জোগান রুখতে নেওয়া ব্যবস্থার মূল্যায়ন করতে বসছে। সেটা মাথায় রেখেই পাকিস্তান এসব করছে বলে দাবি ভারতের।