নয়াদিল্লি: ভারতে দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন স্বামী। পাকিস্তান থেকে সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বারস্থ এক মহিলা। স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ে আটকাতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রার্থনা করলেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মহিলার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে, যা ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি সামনে আসতেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন নেটিজেনরা। দুই দেশের আইন বিশেষজ্ঞরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এই ঘটনায়। (Nikita Nagdev)

Continues below advertisement

ওই পাকিস্তানি মহিলার নাম নিকিতা নাগদেব। তিনি করাচির বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে। নিকিতা জানিয়েছেন, ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি পাকিস্তান বংশোদ্ভূত বিক্রম নাগদেবের সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। দীর্ঘমেয়াদি ভিসার দৌলতে ভারতের ইন্দৌরে রয়েছেন বিক্রম। হিন্দু রীতিনীতি মেনেই বিয়ে হয় তাঁদের। বিয়ের একমাস পর, ২৬ ফেব্রুয়ারি নিকিতাকে ভারতে নিয়ে আসেন বিক্রম। কিন্তু মাসখানেক যেতে না যেতেই জীবন ওলটপালট হয়ে যায় তরুণীর। (India-Pakistan Relations)

নিকিতার দাবি, ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা দেখিয়ে ২০২০ সালের ৯ জুলাই তাঁকে আটারি সীমান্তে ছেড়ে দেন বিক্রম। জোর করে পাকিস্তান পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাঁকে। সেই থেকে আর তাঁকে ভারতে ফেরানোর কোনও চেষ্টা করেননি বিক্রম। বার বার অনুরোধ করলেও, প্রত্যাখ্যাত হন। ভিডিওবার্তায় নিকিতা বলেন, “আজ যদি ন্যায় বিচার না হয়, বিচারব্যবস্থার উপর বিশ্বাস হারাবেন মহিলারা। শ্বশুরবাড়িতে বহু মেয়েকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। সকলকে অনুরোধ করছি, আমার পাশে দাঁড়ান।”

Continues below advertisement

বিয়ের পরই বিক্রমের আচরণ পাল্টে যায় বলে দাবি নিকিতার। তাঁর বক্তব্য, “ যখন শ্বশুরবাড়ি ফিরে যাই, ওঁদের আচরণই পাল্টে যায়। জানতে পারি, এক আত্মীয়ার সঙ্গেই সম্পর্কে জড়িয়েছে আমার স্বামী। শ্বশুরমশাইকে সেকথা জানালে, উনি বলেন, ‘পুরুষদের এমন সম্পর্ক হয়। কিছু করার নেই’।” 

নিকিতার দাবি, করোনার সময় তাঁকে পাকিস্তান ফিরে যেতে বাধ্য করেন বিক্রম। এখন আর ফেরাতে নারাজ। করাচি ফিরে গিয়ে জানতে পারেন, দিল্লির এক মহিলার সঙ্গে দ্বিতীয়বার বিয়ের পরিকল্পনা করছেন বিক্রম। আইনত প্রথম স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করেন কী করে, সেই নিয়ে চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেন নিকিতা। ভারতের মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের তত্ত্বাবধানে Sindh Panch Mediation and Legal Centre-এর সামনে বিষয়টি উত্থাপিতও হয়। বিক্রম এবং তাঁর বাগদত্তাকে নোটিস পাঠানো হয়েছিল, শুনানিও হয়েছিল বিষয়টি নিয়ে। কিন্তু মধ্যস্থতা সফল হয়নি। Sindh Panch Mediation and Legal Centre ৩০ এপ্রিল যে রিপোর্ট দেয়, তাতে বলা হয়েছে, স্বামী-স্ত্রী, দু’জনের কেউই ভারতের নাগরিক নন। তাই বিষয়টি পাকিস্তানের এক্তিয়ারে পড়ে। বিক্রমকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর সুপারিশও করা হয় রিপোর্টে।

চলতি বছরের মে মাসে ইন্দৌর সোশ্যাল পঞ্চায়েতের দ্বারস্থও হন নিকিতা। সেখান থেকেও বিক্রমকে পাকিস্তান ফেরত পাঠানোর সুপারিশ করা হয়। জেলাশাসক আশিস সিংহ জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।