আমদাবাদ : ঠিক করে হয়তো বুলিও ফোটে না। তাতেও সকাল সকাল তুলে স্কুলে পাঠিয়ে দেন মা ! কি-ই আর করার আছে ! প্রতিযোগিতার যুগ যে ! চাপে পড়ে তাই বাবা-মাকেও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয় একদম ছোট্ট অবস্থাতেই স্কুলে পাঠিয়ে দিতে হয় একরত্তিকে। যদিও এনিয়ে এবার কড়া মন্তব্য করল গুজরাত হাই কোর্ট। যেসব বাবা-মা ৩ বছরের কম বয়সী শিশুদের জোর করে প্রিস্কুলে পাঠাচ্ছেন তাঁরা "অবৈধ কাজ" করছেন। এমনই পর্যবেক্ষণ আদালতের। ২০২৩-'২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে ক্লাস ওয়ানের ভর্তির জন্য ন্যূনতম বয়স হতে হবে ৬ বছর, গুজরাত সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে একগুচ্ছ আবেদন জমা পড়েছিল। যা বাতিল করে দিয়েছে আদালত।
২০২০ সালের ৩১ জানুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল গুজরাত সরকার। সেই অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে ক্লাস ওয়ানে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সসীমার কথা উল্লেখ করা ছিল। রাজ্যের যেই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানান বেশিকিছু বাচ্চার অভিভাবকরা। কারণ, তাঁদের সন্তানদের ২০২৩ সালের ১ জুনের মধ্যে ৬ বছর পূরণ হয়নি। সেই মামলার শুনানিতেই গুজরাত হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সুনীতা আগরওয়াল ও বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়ার ডিভিশন বেঞ্চের পর্যেবক্ষণ, "আমাদের কাছে এমন আবেদনকারীরা রয়েছেন যাঁরা জোর করে তাঁদের সন্তানদের ৩ বছরের আগে প্রিস্কুলে পাঠিয়েছিলেন। যা একপ্রকার অবৈধ কাজ।"
নির্দেশনামায় আরও বলা হয়, আবেদনকারীদের কোনও ইচ্ছাপূরণ করা হবে না, কারণ তাঁরা তারা শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯-এর শিক্ষার অধিকার বিধিমালা, ২০১২-র আদেশ লঙ্ঘনের দায়ে দোষী। ২০১২-র RTE নিয়মের ৮ নম্বর ধারায় প্রিস্কুলে ভর্তির নিয়ম বলা আছে। সেই নিয়মের উল্লেখ করে আদালত বলে, ১ জুনের মধ্যে যেসব বাচ্চা ৩ বছর বয়সী না হচ্ছে, তাদের ভর্তি নিতে পারবে না কোনও প্রিস্কুল।
আদালত আরও বলে, ৩ বছর পূরণ করার আগেই শিশুদের প্রিস্কুলে পাঠিয়ে দিয়েছিল এইসব অভিভাবকরা। ২০১২-র RTE নিয়ম অনুযায়ী, প্রিস্কুলে ভর্তির ন্যূনতম বয়সসীমা লাগু আছে গুজরাতে ২০১২-র ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে।
এই পরিস্থিতিতে আবেদনকারীরা আবেদন জানান, প্রিস্কুলে ৩ বছর পূরণ করা এইসব শিশু যারা ২০২৩-এর ১ জুনের মধ্যে ৬ বছর বয়সের সীমা পূরণ করেনি, তাদের ক্ষেত্রে যেন অন্তত ছাড় দেওয়া হয়।
জাতীয় শিক্ষা নীতি ২০২০ অনুসারে, একটি শিশুর ৮৫ শতাংশের বেশি মস্তিষ্কের বিকাশ ছয় বছর বয়সের আগে ঘটে। যা সুস্থ মস্তিষ্কের বিকাশ এবং বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রাথমিক বছরগুলিতে মস্তিষ্কের যথাযথ যত্ন এবং উদ্দীপনার গুরুত্বের বিষয়ে নির্দেশ করে। আদালত এমনটাই পর্যবেক্ষণ করেছে।