কলকাতা: সংসদে দাঁড়িয়ে সতীর্থ বিএসপি সাংসদ (BSP MP Danish Ali) দানিশ আলির উদ্দেশে 'আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার' সত্ত্বেও কেন সাসপেন্ড করা হবে না বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরিকে (BJP MP Ramesh Bidhuri)? এই নিয়ে শুক্রবার তীব্র আলোড়ন শুরু হয়েছিল রাজধানীতে। তীব্র সমালোচনা ও অস্বস্তির মুখে, বিকেলের দিকে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার (J P Nadda) নির্দেশে সাংসদ বিধুরিকে শো-কজ নোটিস ধরাল গেরুয়া শিবির। তবে বিষয়টি নিয়ে এর মধ্যেই লোকসভার স্পিকারকে চিঠি লিখেছেন কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর মতে, এই ঘটনা 'প্রিভিলেজ কমিটি'-তে পাঠানো উচিত।

  


কী ঘটল?
লোকসভা ও রাজ্যসভায় মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হওয়ার পর জাতীয় রাজনীতিতে এখন প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা নিয়ে নতুন আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই দক্ষিণ দিল্লির বিজেপি সাংসদ রমেশ বিধুরির বিরুদ্ধে এই ধরনের গুরুতর অভিযোগ দলের অস্বস্তি বাড়াতে পারে। লোকসভার স্পিকার তাঁর বিতর্কিত মন্তব্য ইতিমধ্যেই সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ দিল্লির বিজেপি সাংসদকে।
সূত্রের খবর, সংসদে চন্দ্রযান অভিযানের সাফল্য নিয়ে আলোচনা চলার সময় বিএসপি সাংসদ দানিশ আলির উদ্দেশে অত্যন্ত  'আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার' ব্যবহার করেন রমেশ বিধুরি। এক বার নয়, একাধিক বার তাঁর মুখে সেই অশালীন কথা শোনা যায় বলে অভিযোগ। ঘটনার পর দানিশ লোকসভার অধ্যক্ষকে চিঠিতে লেখেন, 'আপনার তত্ত্বাবধানে নতুন সংসদ ভবনের ভিতর এই ধরনের ঘটনা আমাকে এক জন সাংসদ হিসেবে এবং এই দেশের এক জন সংখ্যালঘু সদস্য হিসেবে অত্যন্ত দুঃখ দিয়েছে।' বিরোধীরা সম্মিলিত ভাবে এর প্রতিবাদ জানালে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ দুঃখপ্রকাশ করেন। বলেন, 'ওই সদস্যের মন্তব্যে যদি বিরোধী শিবির দুঃখ পেয়ে থাকেন, তা হলে আমি মার্জনা চাইছি।'    


কী বলছেন বিরোধীরা?
লোকসভার স্পিকারের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে অধীর চৌধুরী জানান, এই ধরনের মন্তব্য সংসদের কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিলে কোনও অর্থপূর্ণ প্রভাব পড়ে না। তাঁর মতে, প্রিভিলেজ কমিটির কাছে এই ধরনের বিষয় পাঠিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির শাস্তির ব্যবস্থা করা উচিত। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশও  বলেন, 'ভয়ঙ্কর লজ্জার বিষয়। রাজনাথ সিংহের এই ক্ষমা চাওয়া মোটেও আন্তরিক নয়, গ্রহণযোগ্য তো নয়ই। এই ধরনের আচরণ সংসদের অপমান।' তাঁর বক্তব্য, এক্ষেত্রে 'সাসপেনশন'-ই একমাত্র পথ কারণ সাংসদ বিধুরির মন্তব্য প্রত্য়েক ভারতীয়ের কাছে লজ্জার। সঙ্গে কংগ্রেস মনে করিয়েছে, গত অধিবেশনে মন্ত্রীদের অসম্মান করার অভিযোগে লোকসভায় তাদের দলনেতা অধীররঞ্জন চৌধুরীকে সাসপেন্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্পিকার। তা হলে এবার কেন একই পথে হাঁটা হল না? লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লা অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদকে এই আচরণের জন্য কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ তাঁর হয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন। কিন্তু বিরোধী শিবিরের বক্তব্য, এই ক্ষমা চাওয়া যথেষ্ট নয়। ঘটনাটির ভিডিও পোস্ট করে আম আদমি পার্টিরও প্রশ্ন, 'বিজেপির দিল্লি সাংসদ এক জন মুসলিম সাংসদের উদ্দেশে স্পিকারের সামনেই এই ধরনের শব্দ ব্যবহার করছেন, এটাই কি বিজেপির সংস্কৃতি?' গোটা ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেন আরজেডি এমপি মনোজ ঝা। নিন্দা করে বিবৃতি দেয় সিপিএমও। ন্যাশনাল কনফারেন্স লিডার ওমর আবদুল্লা আবার বলেছেন, '...নতুন পার্লামেন্ট, পুরনো মনোভাব।' 


আরও পড়ুন:ভারত-কানাডা সম্পর্কের প্রভাব পড়তে পারে এই স্টকগুলিতে, জেনে নিন নাম