বিজেন্দ্র সিংহ ও দীপক ঘোষ, নয়া দিল্লি: সংসদের অধিবেশনের আগে (Parliament Session 2024) সোমবার ছিল শপথগ্রহণের দিন। আর সেদিনই উত্তাল হল সংসদ- প্রসঙ্গ নিট বিতর্ক।
এদিন সাংসদ পদে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। শপথ নিলেন মোদি-মন্ত্রিসভার সাংসদরাও। আর অষ্টাদশ অধিবেশন শুরুর আগে, সোমবার প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা গেল সহমতের ভিত্তিতে চলার বার্তা। এরইমধ্য়ে, এদিনই সংবিধান হাতে পুরনো সংসদ ভবনের বাইরে বিক্ষোভ দেখাল কংগ্রেস (Congress)।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, 'আমরা সবসময় চেষ্টা চালিয়ে যাব যে, প্রত্যেকের সঙ্গে সহমত পোষণ করে, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ভারত মাতার সেবা করতে, ১৪০ কোটি দেশবাসীর আশা-আকাঙ্খা পরিপূর্ণ করতে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সংবিধানের মর্যাদা রক্ষা করে, যে কোনও সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে চাই।'
কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীজি, অমিত শাহজি প্রতিষ্ঠান ও সংবিধানের উপর যে আক্রমণ করছেন, সেটা আমরা কখনই আশা করি না। সেটা আমরা হতে দেব না। এই কারণে আমরা শপথ নেওয়ার সময় সংবিধান সঙ্গে রেখেছিলাম। আমাদের বার্তা সর্বত্র পৌঁছে যাচ্ছে, ভারতের সংবিধানকে কোনও শক্তি ছুঁতে পারবে না।'
অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম দিন। আর প্রথম দিনই ঘটনাবহুল সংসদ ভবন। একদিকে সাংসদ পদে শপথ নিলেন নরেন্দ্র মোদি। শপথ নিলেন মোদি মন্ত্রিসভার সাংসদরা। এরইমধ্য়ে সংসদ ভবনের বাইরে বিক্ষোভ দেখাল বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র সাংসদরা। সংবিধান হাতে, পুরনো সংসদ ভবনের সামনে প্রতিবাদে সামিল হলেন ইন্ডিয়া জোটের সাংসদরা। সংবিধান রক্ষা করার বার্তা দেন তাঁরা।
তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্য়োপাধ্য়ায় বলেন, 'যে কোনও সময় ধর্মনিরপেক্ষতার ভাবনা সংবিধান থেকে বাদ দিয়ে দিতে পারে। UCC একতরফা চাপিয়ে দিতে পারে। আমরা সম্প্রতি দেখলাম ভারত-বাংলাদেশের মধ্য়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে, তিস্তার চুক্তি, গঙ্গা- ফরাক্কাকে নিয়ে চুক্তি করা হচ্ছে, বাংলার মুখ্য়মন্ত্রীকে সেখানে ডাকছেন না, এক তরফাভাবে বাংলার সর্বানাশ করা হচ্ছে। তাই সংবিধানকে যাতে রক্ষা করা হয়, তার জন্য় আমরা সেই প্রস্তাবকে সামনে রেখে, আজকে সকলে মিলে একত্রিত হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সংবিধানকে রক্ষা করতে হবে।'
এ বারের লোকসভা নির্বাচনে নিরঙকুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাননি নরেন্দ্র মোদি। তাদের নেতৃত্বাধীন জোট ২৯২টি আসন পেলেও বিজেপি এককভাবে পেয়েছে মাত্র ২৪০টি আসন। অন্য়দিকে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট INDIA পেয়েছে ২৩৩টি আসন।
এই পরিস্থিতিতে তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসলেও, নিরঙ্কুশ সংখ্য়াগরিষ্ঠতা হারিয়ে এখন নরেন্দ্র মোদির গলায় সহমতের সুর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'গত ১০ বছরে, যে পরম্পরা বজায় রাখার জন্য আমরা লাগাতার চেষ্টা চালিয়ে এসেছি, কেননা আমরা বিশ্বাস করি যে, সরকার চালানোর জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়, কিন্তু দেশ চালানোর জন্য সহমত হওয়া খুব জরুরি।'
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কটাক্ষ, 'এবার যদি মোদি 'আগলে বার ৪০০ পার' করত। সংবিধানের গণতান্ত্রিক পদ্ধতি সরিয়ে দিয়ে, নিজে রাষ্ট্রপতি হয়ে বসত। আমরা বেঁচে গেছি, যে উনি হয়নি।'
এদিন সংবিধান রক্ষা, তিস্তা চুক্তি ইস্য়ু, প্রটেম স্পিকার নিয়ে বিতর্ক থেকে শুরু করে, একাধিক বিষয় নিয়ে পুরনো সংসদ ভবনের ২ নম্বর গেটের বাইরে প্রতিবাদে সামিল হন ইন্ডিয়া জোটের সমস্ত সাংসদরা। ছিলেন সনিয়া গাঁধী, মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গাঁধী। সেখানে ছিলেন তৃণমূল ও সমাজবাদী পার্টির সাংসদরাও।
এদিন শপথ নিয়েছেন বিভিন্ন রাজ্য়ের সাংসদরা। এদিন বাংলায় শপথ নিয়েছেন সুকান্ত মজুমদার, শান্তনু ঠাকুররা। সংস্কৃতে শপথ নিয়েছেন বাঁশুরী স্বরাজ। একাধিক সাংসদ নিজের পছন্দমতো ভাষায় শপথ নিয়েছেন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে
আরও পড়ুন: হনুমানজির কৃপা বর্ষিত হোক মঙ্গলবার, কাদের মনে সর্বদা খুশি কাল? কোন রাশির ভাগ্যে কী ?