নয়াদিল্লি: বিরোধীদের কথোপকথনে পাততে Pegasus স্পাইওয়্যার ব্যবহারের অভিযোগ কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। সেই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য কার্যতই সরকারের পক্ষে গেল। কারণ শীর্ষ আদালত জানাল, নাগরিক সমাজকে নিশানা করা না হলে, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে স্পাইওয়্যার ব্যবহার করা অন্যায় নয়। (Pegasus Spyware)

পেগাসাস নিয়ে জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলাকালীন এই মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট। পেগাসাস সফ্টওয়্যারের মাধ্যমে বিরোধীদের ফোনে আড়ি পাতার অভিযোগ উঠেছিল মোদি সরকারের বিরুদ্ধে। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমেও সেই নিয়ে বিশদ রিপোর্ট বেরিয়েছিল। সেই নিয়ে একটি কমিটি গড়ে তদন্তের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সেই তদন্তের রিপোর্ট জনসমক্ষে আসেনি আজও। (Supreme Court)

মঙ্গলবার শুনানিতে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চ বলে, "দেশ স্পাইওয়্যার ব্যবহার করলে সমস্যা কোথায়? একটা বিষয় স্পষ্ট হওয়া দরকার, স্পাইওয়্যার ব্যবহারে সমস্যা নেই। কারও কারও বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারে। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস না করাই ভাল। কার বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে, অবশ্যই প্রশ্ন উঠবে। নাগরিক সমাজের কারও বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হলে, অবশ্যই দেখা হবে।"

বিচারপতি সূর্যকান্ত আরও বলেন, "যে পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি আমরা, তাতে সাবধানী হতে হবে।" কাশ্মীরের পহেলগাঁও সন্ত্রাস হামলাকে টেনেই তিনি এমন মন্তব্য করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। আবেদনকারীর হয়ে এদিন আইনজীবী শ্যাম দিওয়ান Pegasus-তদন্তের রিপোর্ট প্রকাশের দাবি তোলেন। এতে সুপ্রিম কোর্ট বলে, "দেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমিকতার প্রশ্ন জড়িয়ে যে রিপোর্টের সঙ্গে, তা ছোঁয়া যাবে না। কিন্তু কোনও ব্যক্তি যদি জানতে চান, তাঁর নাম আছে কি না, আলাদা ভাবে তাঁকে জানানো যাবে।"

ইজরায়েলের সাইবার প্রযুক্তি সংস্থা NSO-র তৈরি স্পাইওয়্যার Pegasus (পেগাসাস). কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গাঁধী, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়, ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর-সহ বিরোধী শিবিরের তাবড় নেতা, সাংবাদিক এমনকি কেন্দ্রের মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের বিরুদ্ধে Pegusus Spyware ব্যবহার করে আড়িপাতার অভিযোগ ওঠে। সেই নিয়ে কয়েক বছর আগে তোলপাড় হয়ে ওঠে গোটা দেশ।

এর আগে আমেরিকার একটি আদালত Pegasus-কে আড়িপাতার অভিযোগে দায়ী করে। ১৪০০ ডিভাইসে তাদের স্পাইওয়্যার ইনস্টল করা হয় বলে জানা যায় সেই সময়। আমেরিকার আদালতের সেই রায়ের কপিও দেখতে চায় আদালত। ব্যক্তিবিশেষের উদ্বেগের কারণ থাকলেও, সেই সংক্রান্ত নথি রাস্তায় মুখরোচক আলোচনার বিষয় হতে পারে না বলে জানাল সুপ্রিম কোর্ট।