সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা: ভারতে পেট্রোল-ডিজেলের সর্বকালীন রেকর্ড দাম। সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস বাড়িয়ে ৮২০ টাকা রান্নার গ্যাস। আর ডিজেলের দাম বাড়া মানে সব জিনিসের দাম আগুন হওয়া। সব দল ভোট চাইছে, আর সাধারণ মানুষ তাকিয়ে সরকারের দিকে। একটু সুরাহার জন্য।


বৃহস্পতিবার কলকাতায় পেট্রোলের দাম লিটার পিছু ৯১ টাকা ১২ পয়সা। ডিজেলের দাম ৮৪ টাকা ২০ পয়সা। পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৪ সালের ১৫ মে, মনমোহন সিংহের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকার চলে যাওয়ার সময় বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ১০৯ ডলার। আর সে সময় ২০১৪ সালের ১৫ মে ডিজেলের দাম ছিল লিটারপিছু ৬৮ টাকা ৩৮ পয়সা। 


বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম মাত্র ৬৭ ডলার। অথচ ডিজেলের বহু গুণ বেড়ে হয়েছে ৮৪ টাকা ২০ পয়সা। কংগ্রেস আমলে অর্থাত ২০১৪ সালের ১৫ মে বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম ছিল ব্যারেল প্রতি ১০৯ ডলার।  আর ভারতে পেট্রোলের দাম ছিল লিটার পিছু ৭৯ টাকা ৩৬ পয়সা। এখন বিশ্ববাজারে দাম অনেক কম। কিন্তু, ডিজেলের দাম বেড়ে ৯১ টাকা ১২ পয়সা। অর্থাৎ, মনমোহন জমানার থেকে মোদি জমানায় আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম কমলেও, দিনে দিনে মহার্ঘ হয়েছে পেট্রোপণ্যের দাম। বৃহস্পতিবার কলকাতায় এক লিটার পেট্রোলের দাম ৯১ টাকা ১২ পয়সা। এর মধ্যে কেন্দ্র সরকার নেয় শুল্ক  ও সেস মিলিয়ে নেয় ৩২ টাকা ৯০ পয়সা। রাজ্য সরকার ভ্যাট বাবদ পায় ১৮ টাকা ৪৮ পয়সা। অর্থাৎ সব মিলিয়ে পেট্রোলের দামে দুই সরকারের মোট করের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৫১ টাকা। বৃহস্পতিবার ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি ৮৪ টাকা ২০ পয়সা। এই দামের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের মোট করের পরিমাণ ৪৪ টাকা ৩৭ পয়সা।


অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের কথায়, ‘‘বিশ্ববাজারে লকডাউনের সময় দাম কমলে, ট্যাক্স বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, ট্যাক্স এখনও কমালো না। যাদের গ্যাস বা তেলের দাম ঠিক করেন, তাঁদের তো আর এগুলো কিনতে হয় না, ফলে বাস্তব পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয় না। সরকার যে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে, সে তো ট্যাক্স পেয়ারদের টাকায়।’’


এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন হল, মানুষের উপর বোঝা বাড়ানোর পরিবর্তে কি কর কমিয়ে পেট্রোপণ্যের দাম কমাবে মোদি সরকার? রাজ্য সরকার কি পেট্রোল-ডিজেলের উপর তাদের কর আরও কমাবে? আদৌ রেহাই পাবে সাধারণ মানুষ।