মুম্বই: কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ফুঁসছে গোটা দেশ। সেই আবহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পীযূস গয়ালের মন্তব্যে বিতর্ক। তাঁর দাবি, ১৪০ কোটি ভারতীয় যতদিন না দেশভক্তি এবং জাতীয়তাবাদকে নিজেদের ‘পরম ধর্ম’ হিসেবে মেনে না নেন, ততদিন এই ধরনের ঘটনা ভারতকে বিব্রত করতে থাকবে। তাঁর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে গোটা দেশকে এখন কেন্দ্র কাঠগড়ায় তুলছে বলে অভিযোগ তাঁদের। (Piyush Goyal)
মুম্বইয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ওই মন্তব্য করেন পীযূস। তাঁর বক্তব্য়, “১৪০ কোটি ভারতীয় যতদিন না দেশভক্তি এবং জাতীয়তাবাদকে নিজেদের পরম ধর্ম হিসেবে মেনে না নেন, ততদিন এই ধরনের ঘটনা ভারতকে বিব্রত করতে থাকবে। আমার মনে হয়, আন্তর্জাতিক স্তরে আজ ভারতের শক্তিবৃদ্ধি হতে দেখে কিছু লোক বিব্রত। এসব তাদেরই প্রচেষ্টার ফল। কিন্তু ওদের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার ক্ষমতা আছে ভারতের। ভারতের মাটিতে এমন কোনও জায়গা থাকবে না, যেখানে সন্ত্রাসবাদীরা বেড়ে উঠতে পারবে। নকশালবাদকে যেভাবে দ্রুত গতিতে নিকেশ করা হচ্ছে, একই ভাবে গত ছ’বছরে সন্ত্রাসবাদের উপর আঘাত হেনেছি আমরা। সব রকম পদক্ষেপ করা হয়েছে। কাউকে ছাড়ব না আমরা।” (Pahalgam Terror Attack)
পীযূসের এই মন্তব্য নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে লেখা হয়, ‘মাননীয় মন্ত্রী, প্রত্যেক ভারতীয় দেশপ্রেমী। আপনাদের সরকার নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ বলেই এই ঘটনা ঘটেছে। দায় স্বীকার করুন, অন্যকে দোষ দেওয়া বন্ধ করুন’। কেরল কংগ্রেসের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলে লেখা হয়, ‘পীযূস গয়াল, এর চেয়ে লজ্জার আর কী হতে পারে? মেরুদণ্ড থাকলে আপনার নেতাকে বলুন। দেশভক্তি নিয়ে আপনাদের দলের উপদেশের প্রয়োজন নেই দেশের’।
তৃণমূল সাংসদ সাগরিকা ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, ‘পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার জন্য পীযূস গয়াল কি ভারতের নাগরিকদের দুষছেন? নাগরিকরা দেশপ্রেমিক না হলে হামলা চলতে থাকবে বললেন? নরেন্দ্র মোদি সরকার নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। অথচ সেকথা না বলে নাগরিকদেরই সীমান্ত সন্ত্রাসের জন্য দোষারোপ করছে। লজ্জাজনক’।
আম আদমি পার্টি লেখে, ‘নরেন্দ্র মোদি যখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন বলতেন দিল্লিতেই সমস্যা। আজ নরেন্দ্র মোদি নিজে দিল্লিতে রয়েছেন। অথচ দায় এড়াচ্ছেন ওঁর মন্ত্রী পীযূস গয়াল। পহেলগাঁও হামলার দায় নাগরিকদের মাথায় চাপাচ্ছেন। গোটা দেশ, মৃতদের পরিবার সরকারকে প্রশ্ন করছে যে নিরাপত্তার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ছিল না কেন। সেই অবস্থায় মন্ত্রীর এমন মন্তব্য অত্যন্ত লজ্জাজনক ও নিম্নরুচির’।
পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় পাক সংযোগ ধরা পড়ায়, পাকিস্তানি নাগরিকদের ভারত ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। সেই নিয়েও মুখ খোলেন পীযূস। তাঁর বক্তব্য, “আমরা আগেই ঘোষণা করে দিয়েছি। দেশ ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। বেআইনি ভাবে এখানে কেউ থাকতে পারবেন না। ভারতের মানুষ শক্তির অধিকারী, সাহস এবং আত্মবিশ্বাসী। কাশ্মীরে ফের পর্যটন শুরু হবে, তীর্থযাত্রীরা অমরনাথ যাত্রায় যাবেন। কাশ্মীর উন্নয়নের পথে হাঁটবে। কেউ আটকাতে পারবে না।”