মস্কো: কানাঘুষো চলছিল জুন মাস থেকে। সব কিছু মিটমাট হয়ে গেলেও ভাড়াটে সেনাদের (Mercenary) 'বিদ্রোহ' (Revolt) কি ভুলে যেতে পারবেন রুশ প্রেসিডেন্ট (Russian President Vladimir Putin)? সেই ঘটনার ঠিকদু'মাসের মাথায় ভয়ঙ্কর বিমান বিপর্যয়ে পড়লেন 'বিদ্রোহী' ভাড়াটে সেনা সংগঠনের প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন (Wagner chief Yevgeny Prigozhin)। শেষ পর্যন্ত যা খবর, তাতে 'ওয়াগনার' প্রধানের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এখনও পর্যন্ত ক্র্যাশ সাইট থেকে ৮টি দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে খবর। যে ক'জন বিমানে ছিলেন, তাঁদের কারও বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই, দাবি সবকটি রুশ নিউজ এজেন্সির। বিমান-দুর্ঘটনার নেপথ্য়ে 'অন্য কোনও' কারণ রয়েছে কিনা সে ব্যাপারে তারা নীরব। যদিও খবরটি শোনার পর থেকে জুন মাসের সেই বিদ্রোহ নিয়ে আলোচনা চলছে নানা মহলে। 


বিমান-দুর্ঘটনা...
রুশ 'মিনিস্ট্রি অফ এমার্জেন্সি সিচুয়েশন'-এর বিবৃতি, 'বিমানটিতে ৩ কর্মী-সহ ১০ জন ছিলেন। প্রাথমিক ভাবে যা শোনা যাচ্ছে, তাতে সকলেই মারা গিয়েছেন।' রাশিয়ার 'ভার' এলাকায় ভেঙে পড়েছিল বিমানটি। সে দেশের প্রায় সব কটি খবরের সংস্থারই বক্তব্য, বিমানের যাত্রীতালিকায় নাম ছিল 'ওয়াগনার' প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিনের। কিন্তু নিহতের তালিকায় তিনি রয়েছেন কিনা, সে নিয়ে স্পষ্ট কথায় কোনও তরফই কিছু বলেনি। 


'বিদ্রোহ'..
মাসতিনেক আগে 'ভাড়া করা সেনাবাহিনী' নিয়ে মস্কোর দিকে 'মার্চ' করার অভিযোগ উঠেছিল এই প্রিগোজিনের বিরুদ্ধে। দেড় বছর ধরে চলতে থাকা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্টের অন্যতম ভরসার জায়গা ছিল এই ওয়াগনার বাহিনী, দাবি বিদেশের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার। সেই ওয়াগনার বাহিনীই মস্কোর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করায় রক্তচাপ বাড়ে পুতিনের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রফাসূত্র বেরোনোয় বিদ্রোহের সুর নরম করেন প্রিগোজিনের অনুগত ভাড়াটে সেনারা। সেই শর্ত অনুযায়ী, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লদামিরি পুতিনের বিরুদ্ধেই নিজের বিক্ষোভের সুর নরম করে বেলারুশে নির্বাসনে রাজি হয়েছিলেন প্রিগোজিন, উঠে আসে এমন কথা। যদিও গত সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত ওয়াগনার সংগঠনের সঙ্গে কোনও ধরনের সংযোগের কথা স্বীকার করতেন ৬১ বছরের এই ব্যক্তি। তার পর, হঠাতই এক দিন এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে নিজেকে তুলে ধরেন। পুতিনের 'কেটারিং' ব্যবসায় তাঁর 'শেফ'  হিসেবে পরিচিত ছিলেন প্রিগোজিন। প্রায়শই রুশ প্রেসিডেন্ট এবং রুশ সেনাবাহিনীর জন্য এলাহি ডিনারের আয়োজনের দায়িত্ব পড়ত তাঁর উপর। সেই জায়গা থেকে ভাড়াটে সেনা সংগঠনের প্রধান হিসেবে প্রিগোজিনের উঠে আসা, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে তাঁর এবং ওয়াগনার সংগঠনের ভূমিকা সবটাই ছিল তাজ্জব করার মতো। কিন্তু তার থেকেও অদ্ভূত ছিল প্রিগোজিনের নেতৃত্বে বিদ্রোহের সুর। পরে অবশ্য অবস্থান থেকে সরে এসে তিনি জানান, ওই বিদ্রোহ আসলে পুতিনের বিরুদ্ধে নয়, ছিল তথাকথিত রুশ অভিজাত শ্রেণির বিরুদ্ধে। 
লক্ষ্য যে-ই হোন, মস্কোর দিকে তাঁর 'মার্চ' ভাল চোখে দেখেননি কেজিবি-এর প্রাক্তন সদস্য তথা বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন। এবার বিমান বিপর্যয়।


আরও পড়ুন:অবশেষে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বসছে CCTV, কী জানালেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য ?