কলকাতা : মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে কাজে যোগদানের নির্দেশ ইস্যুতে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত অব্যাহত। এনিয়ে আজ সাংবাদিক বৈঠকে সরব হন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন, রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা না করেই কীভাবে বদলির নির্দেশ দেওয়া হল ? তিনি বলেন, পিএম, আপনার দুটো পায়ে ধরলে যদি খুশি হন, আমি তাও করতে পারি। কিন্তু, দয়া করে এই নোংরা খেলা খেলবেন না। মুখ্যসচিবের বিরুদ্ধে 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা' বন্ধ করুন। দয়া করে এই চিঠি ফিরিয়ে নিন। 


প্রসঙ্গত, রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে কাজে যোগদানের নির্দেশ দিয়ে শুক্রবার চিঠি পাঠিয়েছে কেন্দ্র। চিঠিতে মুখ্যসচিবকে ছেড়ে দিতে রাজ্যকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। কেন্দ্রের নির্দেশ, আগামী ৩১ মে সকাল ১০টায় দিল্লির নর্থ ব্লকে রিপোর্ট করতে হবে তাঁকে। ক্যাবিনেট নিয়োগ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এই নির্দেশ বলে জানানো হয়েছে।


এপ্রসঙ্গে আজ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "যখন আমি দিঘায় মিটিং করতে ব্যস্ত ছিলাম, তখন হঠাৎ একটি চিঠি পেয়ে চমকে উঠি। মুখ্যসচিবকে পাঠানোর চিঠি আসে। মুখ্যসচিবের ভুল কী ছিল ? তিনি আমার সঙ্গে কাজ করছিলেন। ওঁর ৩১ মে অবসর নেওয়া কথা ছিল। হ্যাঁ, তিনি ৩ মাস বেশি থাকছেন। করোনার কারণে আমরা তাঁর তিন মাসের মেয়াদ বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছিলাম।"


সম্প্রতি রাজ্যের অনুরোধ মেনে নেয় কেন্দ্র। যা কার্যকর হওয়ার কথা ১ জুন থেকে। কিন্তু তার আগেই মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে ডেকে পাঠাল কেন্দ্র। এনিয়ে মমতা আজ বলেন, "বাংলার হার হজম করতে না পেরে প্রতিহিংসা থেকেই কি মুখ্যসচিবকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হল ? রাজ্যের সঙ্গে বিনা আলোচনায় কীভাবে বদলি নির্দেশ দিল কেন্দ্র ? এটা কেন্দ্রের প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব। মুখ্যসচিব বাঙালি বলে এত রাগ ?"


উল্লেখ্য, রাজ্যের মুখ্যসচিব পদে ৩১ মে-ই আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মজীবনের শেষ দিন ছিল। কোনও আইএএস অফিসারের চাকরির মেয়াদ থাকে ৬০ বছর। মে মাসে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৬০ বছর বয়স হয়েছে। কিন্তু নবান্ন সূত্রে খবর, তার আগেই কেন্দ্রের কাছে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের তিন মাসের এক্সটেনশন চেয়ে চিঠি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। দিল্লির অ্যাপয়েনমেন্ট কমিটি অফ ক্যাবিনেট সেটার অনুমোদন দেয়। গতকাল চিঠি দিয়ে জানানো হয়, তিন মাস মঞ্জুর করা হল। কিন্তু দিল্লিতে এসে কাজ করতে হবে তাঁকে। নর্থ ব্লকের মিনিস্ট্রি অফ পার্সোনাল অ্যান্ড ট্রেনিংয়ে রিপোর্টিং ৩১ মে সকাল ১০টায়।