মস্কো : ২০২০ গালওয়ান সংঘর্ষের পর আর মুখোমুখি হননি দু'জন। দীর্ঘ প্রায় চার বছর পর দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। রাশিয়ায় BRICS সম্মেলনের বাইরে মুখোমুখি বসবেন দুই রাষ্ট্রনায়ক। এমনই জানিয়েছেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশরি। গত কয়েক বছর ধরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর টহল ব্যবস্থার বিষয়ে একাধিকবার ওঠা-নামার সম্মুখীন হয়েছে দুই দেশের সম্পর্ক। এই পরিস্থিতিতে মোদি-জিনপিং বৈঠক ভারত-চিন সম্পর্কে নতুন দিশা দেখাতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
ভারত ও চিন ...উভয় দেশের সম্পর্ক নতুন করে জোড়া লাগতে চলেছে, এহেন জল্পনার মধ্যেই বিদেশ সচিব বলেন, আমি এটা জানাতে পারি যে BRICS সম্মেলনের সাইডলাইনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
২০২০-র গালওয়ান সংঘর্ষের পর একবারই সাধারণ সাক্ষাৎ হয়েছিল মোদি ও জিনপিংয়ের মধ্যে। সেটা ২০২৩ সালের অগাস্ট মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে BRICS সম্মেলনের সাইডলাইনে। ইন্দোনেশিয়ার বালিতে G20 সম্মেলন চলাকালীনও সংক্ষিপ্ত কথাবার্তা হয় তাঁদের মধ্যে।
দুই রাষ্ট্রনায়কই এখন রাশিয়ার কাজানে রয়েছেন। যেখানে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন- রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ব্রাজিলের লুলা ডা সিলভা ও দক্ষিণ আফ্রিকার সিরিল রামাফোসা।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় নিয়ে অশান্তি বাড়তে বাড়তে ২০২০ সালের জুন মাসে গালওয়ান উপত্যকায় ভারতীয় সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে চিনা বাহিনীর। গোলাগুলি না চললেও, সংঘর্ষ চলাকালীন চিনা সেনা বিশেষ ভাবে তৈরি অস্ত্র ব্যবহার করে বলে জানা যায়। ওই সংঘর্ষে ২০ জন ভারতীয় সৈনিকের মৃত্যু হয়। পরে তাদের পাঁচ সৈনিকের মৃত্যুর কথা স্বীকার করে চিনও। গালওয়ান সংঘর্ষের জেরেই ভারত-চিনের বোঝাপড়া তলানিতে এসে ঠেকে।
লাদাখ থেকে অরুণাচল প্রদেশ,লাগাতার চিনা আগ্রাসনের খবর সামনে আসে সাম্প্রতিককালে। শুধু রাস্তা বা সেতু তৈরিই নয়, ভারতীয় ভূখণ্ডের উপর আস্ত গ্রাম গড়ে তোলার ছবিও সামনে এসেছে। সীমান্তে চিনা আগ্রাসন নিয়ে সম্প্রতি মুখ খোলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় ‘অস্বাভাবিক’ হারে সেনা মোতায়েন রয়েছে বলে জানান তিনি। Indian Chamber of Commerce আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন জয়শঙ্কর। সেখানেই চিনা আগ্রাসন নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। জানান, গালওয়ান সংঘর্ষের পর সীমান্তে অতিরিক্ত সেনমা মোতায়েন করে জবাব দেয় ভারত। দেশের নিরাপত্তার সঙ্গে আপসের কোনও প্রশ্ন ওঠে না। তাই ‘অস্বাভাবিক’ হলেও, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় প্রচুর সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।