নয়াদিল্লি : মণিপুর নিয়ে তিনি যাতে মুখ খোলেন, তাই সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবই নিয়ে চলে আসে বিরোধীরা। বারবার উত্তরপূর্বের এই অশান্ত রাজ্য নিয়ে তাঁকে কাঠগ়ড়ায় তুলেছে বিরোধীরা। সেই মণিপুরেই শান্তির আবেদন জানালেন প্রধানমন্ত্রী। ৭৭তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার মঞ্চ থেকে দেশবাসীর উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। সেই মঞ্চ থেকেই প্রধানমন্ত্রী তোলেন মণিপুর প্রসঙ্গ।


 






তিনি বলেন, "মণিপুরের মানুষের সঙ্গে আছে এই দেশ। শান্তির মাধ্যমেই সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার সমাধানের সমস্ত পথ খুঁজছে।"


জাতিগত হিংসায় বিধ্বস্ত মণিপুর। পুলিশের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি। গত ৩ মে থেকে এই রাজ্যে কুকি-জো-চিন ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে এই পরিংসংখ্যান। পুলিশি এই ডেটা সম্প্রতি জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। প্রায় তিন মাস ধরে হিংসার ঘটনা লেগেই রয়েছে মণিপুরে। এই পরিস্থিতিতে মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যাতে মুখ খোলেন তা নিয়ে বারবার সরব হয়েছে বিরোধীরা। এই ইস্যুতে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও আনে তারা। কংগ্রেসের তরফে দাবি করা হয়, সংসদে এসে প্রধানমন্ত্রী যাতে মণিপুরে এসে মুখ খোলেন সেই লক্ষ্যেই অনাস্থা।


সেইমতো বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবের বৃহস্পতিবার জবাবি ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি যখন লোকসভায় বক্তব্য় রাখছেন, তখন রাহুল গান্ধীও উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য়ের মাঝে কখনও মণিপুর, কখনও ইন্ডিয়া স্লোগান তোলেন তাঁরা। বিকেল ৫.০৯-এ ভাষণ শুরু করার প্রায় দেড় ঘণ্টা পরও তাঁর মুখে মণিপুরের প্রসঙ্গ না আসায় বিরোধী সাংসদরা একসঙ্গে লোকসভা থেকে ওয়াকআউট করেন। বিরোধী শূন্য লোকসভায় মণিপুর নিয়ে ভাষণ রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তবে বক্তব্যর শুরুতে মণিপুর প্রসঙ্গে বিরোধীদের নিশানা করতে ছাড়েননি প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'মণিপুর নিয়ে আলোচনায় অংশ নেওয়ার ইচ্ছে নেই বিরোধীদের। রাজনীতি দূরে সরিয়ে কথা বলতে চেয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আলোচনায় অংশই নিতে ইচ্ছা নেই বিরোধীদের।' প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'মণিপুরের ঘটনা আদালতে বিচারধীন রয়েছে। মণিপুরের ঘটনায় অনেকেই তাঁদের স্বজন হারিয়েছেন। মহিলাদের সঙ্গে যা হয়েছে তা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। দোষীদের সর্বোচ্চ সাজা দেওয়ার জন্য কেন্দ্র সরকার রাজ্য সরকার একসঙ্গে প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। দেশের সব নাগরিকদের আশ্বস্ত করছি আসন্ন ভবিষ্যতে মণিপুরে শান্তির সূর্য উঠবে, মণিপুর আবার আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাবে।  দেশ আপনাদের সঙ্গে আছে, এই সংসদ সঙ্গে আছে। আমরা সবাই মিলে সমাধান করব। শান্তি স্থাপন হবেই।' 


আজও প্রধানমন্ত্রীর স্বাধীনতা দিবসের বক্তব্যেও উঠে আসে মণিপুর প্রসঙ্গ। মোদি বলেন, "গত কয়েক সপ্তাহে মণিপুরে একের পর এক হিংসার ঘটনা ঘটেছে। অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। আমাদের মা-বোনদের সম্মানহানি হয়েছে। কিন্তু, সেখানে ধীরে ধীরে শান্তি ফিরছে। মণিপুরে সঙ্গে আছে ভারত।"