নয়াদিল্লি : সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের অবস্থান এবং 'অপারেশন-সিঁদুর' সংক্রান্ত তথ্য রাষ্ট্রপরিষদের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য বিভিন্ন রাষ্ট্র এবং বিভিন্ন সঙ্গী রাষ্ট্রের কাছে তুলে ধরছে ভারতীয় সাংসদদের বিভিন্ন দল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সেইসব প্রতিনিধিরা দেশে ফিরলে তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সূত্রের খবর অনুযায়ী, সপ্তাহান্তে বা পরের সপ্তাহের গোড়াতেই হতে পারে সেই আলোচনা। বৈঠকে বিশিষ্ট সাংসদ এবং কূটনীতিকরা তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেয়ার করবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের এই ইস্যুতে কী মতামত তা নিয়ে ভারতীয় প্রতিনিধিদের ফিডব্যাক নিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী। এমনই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিরীহের প্রাণহানির জবাবে পাল্টা প্রত্যাঘাতের পথে হাঁটে ভারত। 'অপারেশন সিঁদুর' চালিয়ে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেয়। তারপর কয়েকদিন ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে কার্যত যুদ্ধের আবহ তৈরি হওয়া। পাকিস্তান ভারতকে টার্গেট করে ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র পাঠালে সেসব গুলি করে মাটিতে নামায় ভারতের সশস্ত্র বাহিনী। শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তানেও পাল্টা প্রত্যাঘাত শুরু করে ভারত। আতঙ্কে নড়েচড়ে বসে পাকিস্তান এবং শেষমেশ ডিজিএমও পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে উভয় দেশের সংঘর্ষবিরতি।
এর পরপরই কূটনৈতিকভাবে পাকিস্তানের উপর আরও চাপ তৈরি করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সাংসদদের প্রতিনিধি পাঠায় ভারত। সাতটি প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়। সকল প্রকার সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারতের জাতীয় ঐকমত্য এবং দৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গির কথা তুলে ধরাই তাদের লক্ষ্য। এই প্রতিনিধি দলগুলির নেতৃত্বে রয়েছেন- সাংসদ শশী তারুর (কংগ্রেস), রবি শঙ্কর প্রসাদ (বিজেপি), সঞ্জয় কুমার ঝা (জেডিইউ), বৈজয়ন্ত পাণ্ডা (বিজেপি), কানিমোঝি করুণানিধি (ডিএমকে), সুপ্রিয়া সুলে (এনসিপি) এবং শ্রীকান্ত একনাথ শিণ্ডে (শিবসেনা)।
ভারতের এই কূটনৈতিক মিশন শুরু হয়েছে গত ২১ মে থেকে। ৫ জুনের মধ্যে ৩৩টির বেশি দেশ ঘুরে ফেলার কথা সাংসদ, প্রাক্তন মন্ত্রী ও কূটনীতিকদের সাতটি প্রতিনিধি দলের। কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের সমন্বয়ে এই উদ্যোগের লক্ষ্য হল, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একটি ঐক্যবদ্ধ জাতীয় অবস্থান উপস্থাপন করা, আন্তর্জাতিকভাবে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করা এবং সন্ত্রাসী নেটওয়ার্কগুলিকে লালন-পালনে তাদের সামরিক ও গোয়েন্দারা যে জড়িত তা তুলে ধরা। সমস্ত প্রতিনিধিদল তাদের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য, সীমান্ত সন্ত্রাসে আইএসআই-এর জড়িত থাকার প্রমাণ এবং 'অপারেশন সিঁদুরের' সরাসরি বিবরণ নিয়ে গেছে। যা বিদেশি সরকার, মিডিয়া, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং জাতিসংঘের সংস্থাগুলির কাছে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।