দেহরাদূণ: পথ দেখিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পকেই এ বার আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে গেলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল (Arvind Kejriwal)। আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে উত্তরখণ্ডের (Uttarakhand) সমস্ত প্রাপ্তবয়স্ক মহিলাকে মাসোহারা ১০০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন তিনি। তাঁর দল আম আদমি পার্টিকে (AAP) দিয়ে ক্ষমতায় আনলেই এই সুবিধা মিলবে বলে জানিয়েছেন কেজরীওয়াল। 


মঙ্গলবার এক দিনের সফরে কুমায়ুনের কাশীপুরে ছিলেন কেজরীওয়াল। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনে উত্তরাখণ্ডে আপ ক্ষমতায় এলে, প্রতি মাসে ১৮ ঊর্ধ্ব মহিলাদের অ্যাকাউন্টে ১০০০ টাকা করে জমা করবে আমাদের সরকার।’’ কেজরীওয়াল জানান, এতে ৩০০০ কোটি টাকা খরচ হবে রাজ্য সরকারের। কিন্তু তা সুইস ব্যাঙ্কে জমা পড়ার বদলে রাজ্যের মহিলাদের হাতে তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি। 


উল্লেখ্য, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের (West bengal Assembly Elecion 2021) মহিলাদের হাতে নগদ তুলে দিতে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প আনেন তৃণমূলনেত্রী মমতা।  মমতার এই প্রকল্প সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অন্য রাজ্যগুলিতেও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। ভোটযুদ্ধের আগে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতে মহিলাদের পাশে টানতে চাইছে সব দলই। তৃমমূল নিজেও গোয়ায় এই ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পকে ব্যবহার করতে চলেছে। 


তবে উত্তরাখণ্ডের (Uttarakhand Assembly Election 2022) মতো রাজ্যে কেজরীওয়ালের এই ঘোষণার পিছনে রাজনৈতিক কৌশল দেখতে পাচ্ছেন অনেকেই। কারণ উত্তরাখণ্ডের মোট জনসংখ্যা  ১ কোটি ৮৬ হাজার। এর মধ্যে মহিলার সংখ্যা প্রায় ৫০ লক্ষের কাছাকাছি। শিশুদের বাদ দিয়ে যদি প্রাপ্তবয়স্, ভোটদানে সক্ষম মহিলাদের সমর্থনও জোটাতে পারেন, সে ক্ষেত্রে বাকিদের থেকে কেজরীওয়ালের দল অনেকটাই এগিয়ে যাবে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। 


দেশের নির্বাচনে মহিলাদের (Women Voters) সার্বিক অংশগ্রহণই রাজনীতিকদের রণকৌশলে পরিবর্তন ঘটিয়েছে। কারণ, ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরাখণ্ড থেকে যে ৬২.৩৬ শতাংশ ভোট পড়েছিল, তাতে ৪৭.৭৯ শতাংশ ভোট ছিল মহিলাদের। আগের বিধানসভা নির্বাচনেও ৬৫.৬ শতাংশ ভোটের মধ্যে ৪৭.৪৩ শতাংশ ছিল মহিলা ভোট। তাতেই মহিলাভোট ঝুলিতে ভরতে সচেষ্ট হয়েছে সব দলই। এর আগে পঞ্জাবেও মহিলাদের মাসোহারা দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন কেজরীওয়াল। 


কিন্তু উত্তরাখণ্ডের ঘাড়ে আগে থেকেই যেখানে ৮৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ রয়েছে, সেখানে কেজরীওয়াল আদৌ প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। কিন্তু কেজরীওয়ালের যুক্তি, উত্তরাখণ্ডের বাজেট মোট বাজেট ৫৫ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ টাকা দুর্নীতিতে চলে যায়। তাই বাজেটের ২০ শতাংশও যদি ধরা হয়, সে ক্ষেত্রে ১১ হাজার কোটি টাকা বাঁচে। মহিলাদের দিয়েও তা থেকে টাকা বাঁচবে।