রুমা পাল, ঋত্বিক মণ্ডল ও কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: জল জমার কারণে মঙ্গলবার খিদিরপুরে বাতিল হয়ে গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা। আজ ভবানীপুর বিধানসভা এলাকার অন্তর্গত একবালপুরের সুধীর বসু রোডে এদিন বিকেলে তৃণমূল প্রার্থীর সভা করার কথা ছিল।
কিন্তু, টানা বৃষ্টিতে জল জমে যায় সভামঞ্চের সামনে। সকাল গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও জল নামেনি। মঙ্গলবার সকালে এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান ফিরহাদ হাকিম। ডাকা হয় কলকাতা পুরসভার কমিশনারকে। পাম্প বসিয়ে জল বের করার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু, লাভের লাভ হয়নি।
কলকাতা পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য তথা তৃণমূল নেতা তারক সিংহ বলেন, গতকাল থেকে চেষ্টা করেছি জল নামাতে। গতকাল রাত থেকে যে বৃষ্টি হয়েছে। যেহেতু আজ ১১টার পরে লকগেট বন্ধ করতে হয়েছিল, সেই জল জমে আছে। ফলে, এদিনের মতো বাতিল মমতার সভা। তৃণমূল সূত্রে খবর, আগামীকাল হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা।
জমা জল যন্ত্রণা নিয়ে এদিন তৃণমূল সরকারের উদ্দেশে কটাক্ষ ছুঁড়ে দেন বিজেপির সদ্য নিযুক্ত রাজ্য সভাপতি। সুকান্ত মজুমদার বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন লন্ডন বানাবেন, কিন্তু ভেনিস হয়ে গেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি নৌকা উপহার দেব।
পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি বলেন, কলকাতার জল নামার গতি বেড়েছে। আগে দিনের পর দিন এক একটা জায়গায় জল জমে থাকত, সেসব দেখেছি। সমালোচনার জন্য সমালোচনা করছেন, বাস্তবটা বুঝতে হবে।
এদিকে, বৃষ্টি থামলেও জলের তলায় কলকাতার বিস্তীর্ণ এলাকা। দক্ষিণের নিউ গড়িয়া থেকে বাঙুর, ভিআইপি। এখনও জলবন্দি রাস্তা। জল থইথই খিদিরপুর।
কামারহাটি পুরসভার ১১ নং ওয়ার্ড সম্পূর্ণ জলমগ্ন। মঙ্গলবার বিকেলে জলমগ্ন এলাকা ঘুরে দেখেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। সঙ্গে ছিলেন কামারহাটির পুর কর্তৃপক্ষ।
এলাকার মানুষ বিধায়ককে সামনে পেয়ে তাদের জল যন্ত্রণার কথা তুলে ধরেন। এদিন মদন মিত্র বলেন, দীর্ঘদিনের সমস্যা এটা। এই সমস্যা সমাধানের জন্য দুশো কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
রবিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির জেরে জল জমে কলকাতার নানা প্রান্তে। বৃষ্টি কমলেও, মঙ্গলবারও জলযন্ত্রণা অব্যাহত। দক্ষিণ কলকাতার নয়াবাদে বহু বাড়িতেই জল ঢোকে।
একই অবস্থা পাশের মুকুন্দপুরেও। এই এলাকায় একাধিক হাসপাতাল। সমস্যায় পড়তে হয় রোগীদের। অজয়নগর মোড় থেকে বাঘাযতীন উড়ালপুল পর্যন্ত রাস্তাও জলের তলায়।
জলের তলায় গড়িয়া স্টেশন রোডের একাংশ। জলমগ্ন ইএম বাইপাস থেকে পঞ্চসায়র যাওয়ার রাস্তা। জলবন্দি সোনারপুর ও নরেন্দ্রপুরের বিভিন্ন এলাকা।
সোনারপুরের মিশনপল্লিতে তো প্রায় কোমর সমান জল। এয়ারপোর্ট এক নম্বর গেট থেকে বাগুইআটি পর্যন্ত ভিআইপি রোডের একাংশও জলমগ্ন।
জলের তলায় মতিঝিল কলেজ থেকে দমদম স্টেশন পর্যন্ত রাস্তা। চিনারপার্ক, লেকটাউন, বাঙ্গুর থেকে বেলঘরিয়া - সর্বত্র দুর্ভোগের দৃশ্য।
আরও পড়ুন: জল দুর্ভোগ, ভাঙড়ে সাধারণ মানুষের জন্য ক্যাম্প তৈরির ঘোষণা মিমি চক্রবর্তীর
আরও পড়ুন: ঘূর্ণার্বত বদলে গেল নিম্নচাপে! ফের ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জেলায় জেলায়