কৃষ্ণেন্দু অধিকারী ও পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা : শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ওয়ার্ডে প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়। আর তা নিয়ে বিস্ফোরক প্রাক্তন মেয়র। অভিযোগ করলেন, এজেন্সির কাছে কথা বলে, অনেকে পুরস্কৃত। আর তিনি না বলে তিরস্কৃত। এদিকে রত্না চট্টোপাধ্যায়কে বেহালার বাড়ি ছাড়ার নোটিস পাঠালেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।


কলকাতা পুরভোটের দামামা বেজে গেছে, প্রচার শুরু হয়ে গেছে। সেখানে দু’বারের মেয়র আজ ঘরবন্দি। শোভন চট্টোপাধ্যায়-বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি ছেড়েছেন আগেই। তৃণমূলের সঙ্গেও তাঁদের সম্পর্ক সময়ে সময়ে বদলেছে। সেই টানাপোড়েনই এবার সংঘাতের রূপ নিল। কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে রত্না চট্টোপাধ্যায়ের মনোনয়ন ঘিরে দ্বন্দ্ব চরম আকার নিল। 


পরপর দু’বার কলকাতার মেয়র ছিলেন তৃণমূলের কানন। আর তাঁর ওয়ার্ডেই রত্না চট্টোপাধ্যায়কে প্রার্থী করেছে তৃণমূল। যা দেখে শাসক দলের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ করেছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। 


কলকাতা পুরসভার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলছেন, আমি গ্রেফতার হয়েছি। আমাকে অনেক সময় মমতার পরিবারের বিরুদ্ধে বলানোর চেষ্টা হয়েছে। বলিনি, সব নিজের কাঁধে নিয়েছি। যাঁরা বলেছেন তাঁরা পুরস্কৃত, আর আমি বহিষ্কৃত বাহরে বা!


যদিও কলকাতা পুরসভার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিধায়ক রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, আপনাকে তিরস্কৃত করা হয়নি, আপনি ছেড়ে গেছেন। আপনি দলনেত্রীর পায়ে ধরতে পারতেন।


গত বিধানসভা ভোটে বেহালা পূর্ব আসন থেকে জিতে বিধায়ক হন রত্না চট্টোপাধ্যায়। শোভন-বৈশাখী তখন ছিলেন বিজেপিতে। কিন্তু, বিজেপি ছাড়ার পরও তাঁদের সঙ্গে এমন ব্যবহার কেন ? প্রশ্ন তুলে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন দু’জনেই। 


শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, তৃণমূল রত্না চট্টোপাধ্যায়কে সামনে রেখে শিখণ্ডী করে আমাকে শিক্ষা দিতে চেয়েছে।


শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিধানসভার সময় আমরা নয় বিজেপিতে ছিলাম, এখন তো নেই। তারপরও এই সিদ্ধান্ত কেন? ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে রত্নাকে টিকিট দেওয়া আমাদের ব্যথা দিয়েছে। শোভনদা রজানীতি থেকে দূরে। পথই পথ দেখাবে। ওয়েট অ্যান্ড সি


পাল্টা রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, ওনার বিরুদ্ধে কাউকে শিখণ্ডী করা হয়নি। আমাদেরও অনেক ব্যথা আছে।


রত্নার প্রার্থীপদ নিয়ে সংঘাত পর্বের এখানেই যবনিকা পড়েনি। উল্টে রত্না চট্টোপাধ্যায়কে বেহালার বাড়ি ছাড়ার আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। কয়েক মাস আগে, ১ কোটির বেশি টাকা বেহালার ১৩৯ D/3 মহারানি ইন্দিরা দেবী রোডে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি কেনেন বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বাড়ি অবিলম্বে ছাড়ার জন্য রত্না চট্টোপাধ্যায়কে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাড়ি আগে ছেড়ে দিন। রত্না চট্টোপাধ্যায়কে লিগাল নোটিস পাঠানো হয়েছে, অবিলম্বে বাড়ি ছাড়তে বলা হয়েছে। বাড়ি নির্বাচনী কেন্দ্র করা যাবে না।


যদিও রত্না বলেন, ক্ষমতা থাকলে আসুন। যেভাবে বাড়ি কিনুন না কেন, এই বাড়ির মালিক রত্না চট্টোপাধ্যায়।


বহুদিন পর কলকাতার পুরভোটে যখন মিটিং-মিছিল-সমাবেশ। তখন কর্মীদের সঙ্গে নেই শোভন চট্টোপাধ্যায়। গোলপার্কের ফ্ল্যাটে তাঁর সঙ্গী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়।