কলকাতা: দলের একাংশের বিরুদ্ধে ফের সোচ্চার অভিযোগ করে এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন মনোরঞ্জন ব্যাপারী। বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগ, বিজেপির দালালি করা লোক তৃণমূলের বড় নেতা হয়েছে। দলে যোগদানের পিছনেও খেলা চলছে বলে তাঁর অভিযোগ। দলের পরিচ্ছন্নতার স্বার্থে দলের একাংশকে আগাছা বলে শাস্তির দাবিও তুলছেন বিধায়ক।
চিঠিতে কী লেখা রয়েছে?
"দলের মধ্যে আগাছা দলের ক্ষতি করছে, লোকগুলো যা করার করুক, দুর্নীতিমুক্ত দল চাইছি, তথাকথিত তৃণমূল এরা, দিদির প্রতি এদের নিষ্ঠার অভাব, পরিচ্ছন্ন দল চাই, আপনার আদর্শের বিরুদ্ধে যারা কাজ করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন।"
এবিপি আনন্দর মুখোমুখি হয়েও তৃণমূল বিধায়ক বলেন, "কিছু লোক দলে থেকে বিজেপির দালালি করেছে এতদিন, এখন তারা বড় টিএমসি হয়ে গেছে, এই যোগদান মেলা করাচ্ছে, আমি তো বন্ধ করে দিয়েছিলাম, মেলার নামে কী খেলা চলে তা আপনারা জানেন কি অর্থের লেনদেন? নতুন করে আমাকে বলাচ্ছেন কেন?"
উল্লেখ্য, মনোরঞ্জন ব্যাপারীর ব্যক্তিগত জীবন বৈচিত্রে ভরা। দেশভাগের পর শরণার্থী শিবিরে জীবন কাটিয়েছেন। দিন মজুরি করেছেন। রিকশা চালিয়েছেন। স্কুলে রান্নার কাজ করেছেন। মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার সময় রিকশা চালিয়েছেন। নকশাল আন্দোলনে জড়িয়ে জেল অবধি খেটেছেন। আবার জীবনের কঠিন সংগ্রামের পথ বেয়ে উঠে আসা এই মানুষটার হাত থেকেই বেরিয়েছে বহু মূল্যবান লেখা।অবহেলিত মানুষদের জীবনের প্রতিফলন ঘটেছে তাঁর সাহিত্যে। দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রথম চেয়ারপার্সন থেকে আজ তিনি রাজনীতিতে।
হুগলির বলাগড়ের মতো বিধানসভা কেন্দ্র, যেখানে লোকসভা ভোটের নিরিখে তৃণমূল পিছিয়ে ছিল সেই আসন থেকেই মনোরঞ্জনকে প্রার্থী করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিকে, বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়কের একের পর এক ফেসবুক পোস্ট কিংবা মন্তব্য দলেরও অস্বস্তি বাড়াচ্ছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।
বিধায়ক হওয়ার পরই কখনও ফেসবুকে বিধায়ক লিখেছেন, "আমি হাঁপিয়ে যাচ্ছি। সত্যিই আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে, রাজনীতিতে এসে আমি বোধহয় ঠিক করিনি।" মনোরঞ্জন ব্যাপারীর এই বক্তব্যের পরই অস্বস্তিতে পড়েছিল দল। আর তার রেশ কাটতে না কাটতেই আরও একটি বিস্ফোরক ফেসবুক পোস্ট। মঙ্গলবার বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, "বন্দুক দেখিয়ে ভোটে জিতলে জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকে না। তারা মনে করে, ওই ভাবে বার বার জিতে যাবে। আমি তেমন ভাবে জিতিনি , জিততে চাই না।"
এরপরই নেত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে তাঁকে চিঠি দিয়েছেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী।