আবীর দত্ত, কলকাতা: তৃণমূল নেতা ছত্রধর মাহাতোকে গ্রেফতারের পর, এবার ঝাড়গ্রামে রাজধানী-ভুবনেশ্বর এক্সপ্রেস হাইজ্যাকের ঘটনার দুই তদন্তকারী অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় এনআইএ। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, বর্তমানে ডিএসপি পদমর্যাদার দুই পুলিশ আধিকারিককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে এর আগে রাজ্য পুলিশকে চিঠি দেওয়া হলেও জবাব মেলেনি। এর আগে রাজধানী এক্সপ্রেস হাইজ্যাকের ঘটনার তিন তদন্তকারী অফিসারের মধ্যে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এনআইএ। জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, ওই মামলায় অভিযুক্ত ধনপতি মাহাতো-সহ আরও ২-৩ জনের খোঁজ চলছে।


 


১২ বছর আগে ২০০৯ সালে ঝাড়গ্রামের বাঁশতলায় রাজধানী এক্সপ্রেস হাইজ্যাকের ঘটনায় নাম জড়ায় তৎকালীন জনসাধারণ কমিটির মুখপাত্র ছত্রধর মাহাতোর। যিনি এখন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক। সেই মামলার তদন্তে গতকাল লালগড়ে ছত্রধরের বাড়িতে যায় এনআইএ-র ৪০ জনের দল। সেই মামলাতেই রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও বেআইনি কার্যকলাপ বিরোধী আইন বা ইউএপিএ-তে তৃণমূল নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।


 


২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর লালগড় থেকেই গ্রেফতার হয়েছিলেন ছত্রধর। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা ছিল। বেশ কিছু মামলা থেকে মুক্ত হলেও কয়েকটি মামলার বিচার চলছে। হাইকোর্ট সাজা কমানোয় জেল থেকে ছাড়া পেয়ে ফেব্রুয়ারিতে লালগড়ের আমলিয়া গ্রামের বাড়িতে ফেরেন ছত্রধর। তার বেশ কয়েক দিন পর নতুন করে ২০০৯ সালে লালগড়ে সিপিএম কর্মী প্রবীর মাহাতো খুন ও ঝাড়গ্রামের বাঁশতলায় ভুবনেশ্বর-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস আটকের ঘটনার তদন্ত শুরু করে। সেই সূত্রেই ছত্রধরকে গ্রেফতার করে এনআইএ।


লালগড়ে ভোট মিটতেই ছত্রধর মাহাতোকে গ্রেফতার করে এনআইএ।লালগড়ের আমলিয়া গ্রামে ছত্রধর মাহাতোর নতুন পাকা বাড়ি রয়েছে। পরিবার সূত্রে দাবি, প্রথমে সেই বাড়িতে হানা দিয়ে ছত্রধরের এক ছেলেকে ডাকেন এনআইএ-র গোয়েন্দারা। নতুন বাড়ি থেকে প্রায় ছশো মিটার দূরে নিজের পুরনো বাড়িতে ঘুমোচ্ছিলেন ছত্রধর। ছেলেকে দিয়ে বাবাকে ঘুম থেকে তুলে গ্রেফতার করা হয়।


এনআইএ সূত্রে দাবি, ছত্রধরের স্ত্রী অ্যারেস্ট মেমো প্রত্যাখ্যান করেন। গ্রেফতারের সময় ধস্তাধস্তিতে এক কনস্টেবল আহত হন। শেষ পর্যন্ত ‘গেঞ্জি ও গামছা’ পরা অবস্থায় ছত্রধরকে নিয়ে যান জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসাররা।


এরপর তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। এনআইএ ১৪ দিনের হেফাজত চাইলেও, শেষ পর্যন্ত ছত্রধর মাহাতোর দুদিনের হেফাজত মঞ্জুর করে আদালত।