কাবুল: হিংসার ঘটনা থামছে না। এবার ভয়াবহ গাড়িবোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল কাবুল। আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লা খান মহম্মদির বাড়ির সামনে হয়েছে এই বিস্ফোরণ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়া হয় এলাকায়। এখনও কোনও জঙ্গি গোষ্ঠী এই হামলার দায় স্বীকার করেনি। ইতিমধ্যেই প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বাড়ি ঘিরে ফেলেছে নিরাপত্তাবাহিনী।


টোলো নিউজ জানিয়েছে, রাত ৮টা নাগাদ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর গেস্ট হাউসের কাছে এই বিস্ফোরণ ঘটে। সেই সময় বাড়িতে ছিলেন না তিনি। এই ঘটনায় কেউ আহত হননি। তবে বিস্ফোরণস্থল দেখে প্রাথমিক ধারণা, প্রতিরক্ষামন্ত্রীর আবাসকে লক্ষ্য করেই এই গাড়িবোমা হামলার ছক কষা হয়েছিল। বিস্ফোরণস্থলের কাছেই রয়েছে একাধিক সরকারি ভবন। প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেস ছাড়াও বিভিন্ন দূতাবাস ও মার্কেট স্কোয়্যারের কাছাকাছি এই হামলা হয়। এই চত্বরেই বহু আন্তর্জাতিক মিডিয়া হাউজ ছাড়াও মানবাধিকার সংগঠনের অফিস রয়েছে।


বর্তমানে দেশে 'কেয়ারটেকার ডিফেন্স মিনিস্টার' হিসাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বিসমিল্লা খান মহম্মদি। দীর্ঘ রোগভোগের কারণে অসুস্থ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আসাদুল্লাহ খলিদের জায়গায় দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। আফগানিস্তান সেনায় বহু বছর কামান্ডার পদে কাজ করেছেন মহম্মদি। পরবর্তীকালে প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের সময়ে সেনাপ্রধানের দায়িত্ব সামলেছেন। এছাড়াও আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মতো গুরুদায়িত্ব তাঁকে সামলাতে হয়েছে।


আফগানিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতি বলছে, তালিবানি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অনবরত যুদ্ধ হচ্ছে আফগান সেনার। দেশের বহু জায়গা দখল করে নিয়েছে তালিবান জঙ্গিরা। দেশে বাণিজ্যের 'হাব' হিসাবে পরিচিত কিছু কেন্দ্র এখন চলে গিয়েছে তালিবানিদের দখলে। প্রতিনিয়ত আফগানিস্তানের সেনার সঙ্গে যুদ্ধ চলছে তালিবান জঙ্গিদের। সম্প্রতি আফগানিস্তানের কমেডিয়ান খাসা জওয়ানকে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। খোদ সেই খবর প্রকাশ্যে এনেছে তালিবানি মুখপাত্র। দু'সপ্তাহ আগেই আফগানিস্তানের কৌতূক অভিনেতা খাসাকে অপহরণ করে তালিবানিরা।


আফগানিস্তানে মজার ভিডিয়ো পোস্ট করতেন দক্ষিণ কান্দাহারের এই পুলিশ অফিসার। ফজল আহমেদ নাম হলেও কমেডির জন্য 'খাসা জওয়ান' নামে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন তিনি। কান্দাহারে ডিউটি থেকে বাড়ি ফেরার সময় তাঁকে অপহরণ করে তালিবানিরা। পরে সেই ভিডিয়ো ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে তালিবানি মুখপাত্র জবিহুল্লা মুজাহিদ জানিয়েছে, ফজল মহম্হদ ওরফে খাসা কোনও কৌতূক অভিনেতা ছিল না। তালিবানের বিরুদ্ধে একাধিক যুদ্ধে অংশ নিয়েছিল সে। পুলিশকর্মী হিসাবে সক্রিয় ছিল খাসা। ওর জন্য বহু লোকের মৃত্যু হয়। এমনকী ধরা পড়ার সময় পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল সে। বার বার তাকে মেরে ফেলার কথা বলছিল খাসা।