নয়াদিল্লি: রাজনৈতিক দলগুলিকে পরামর্শ দেওয়া পেশা হতে পারে বলে তখনও পর্যন্ত সেভাবে ওয়াকিবহাল ছিলেন না ভারতীয়রা। কিন্তু সেই ভোটকুশলীর ভূমিকা থেকে রাজনীতির মঞ্চে অবতীর্ণ হয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। নিজের দল 'জন সুরজে'র পত্তন ঘটিয়েছেন। তবে এখনও পর্যন্ত ভোটকুশলী হিসেবে তাঁর ভূমিকা নিয়ে আগ্রহ কমেনি কারও। কী কাজ করতেন তিনি, কত টাকা পেতেন, এমন একাধিক প্রশ্ন রয়েছে। এতদিন পর ভোটকুশলী হিসেবে প্রাপ্ত পারিশ্রমিকের অঙ্ক খোলসা করলেন প্রশান্ত। (Prashant Kishor)
দীর্ঘ কর্মজীবনে বিজেপি, কংগ্রেস, সংযুক্ত জনতা দল, আম আদমি পার্টি, DMK, YSRCP, তৃণমূলের সঙ্গে কাজ করেছেন প্রশান্ত। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলির প্রচারের নীতি নির্ধারণ করে দিতেন তিনি। কোন পথে এগোলে মানুষের কাছে পৌঁছনো যাবে এবং ভোটবাক্সে তার সুফল মিলবে, তার দিক নির্দেশ করতেন। সেই কাজ করতে গিয়ে যে পারিশ্রমিক নিতেন তিনি, তা বলিউডের তাবড় তারকাকেও লজ্জায় ফেলে দিতে পারে। (Prashant Kishor Fee)
উপনির্বাচনের আগে এই মুহূর্তে বিহারে প্রচারে ব্যস্ত প্রশান্ত। গত ৩১ অক্টোবর সেখানে একটি সমাবেশে বক্তৃতা করার সময়ই ভোটকুশলী হিসেবে প্রাপ্ত পারিশ্রমিক খোলসা করলেন। বেলাগঞ্জের সমাবেশে প্রশান্ত বলেন, "আমার উপদেশের উপর ভর করে ১০ রাজ্যে সরকার চলছে। আপনাদের কি মনে হয়, প্রচারে খরচের জন্য টাকা নেই আমার কাছে? আমাকে এতটা দুর্বল ভাবছেন?"
প্রশান্তকে বলতে শোনা যায়, "বিহারে আমার মতো পারিশ্রমিক পাওয়ার কথা কস্মিনকালেও কেউ শোনেননি। একটি মাত্র নির্বাচনে উপদেশ দেওয়ার জন্য ১০০ কোটি, এমনকি তার বেশি পারিশ্রমিকও নিই আমি। একটি নির্বাচনে উপদেশ দেওয়ার জন্য যে টাকা পাই, তা দিয়ে আগামী দু'বছরের প্রচারকার্য খরচ চালাতে পারি আমি।"
আসন্ন বিহার বিধানসভা উপ নির্বাচনে প্রার্থী দাঁড় করিয়েচ্ছে প্রশান্তর 'জন সুরজ'। মোট চারটি আসনে প্রার্থী দিয়েছে তারা। বেলাগঞ্জে দলের প্রার্থী মহম্মদ আমজাদ, ইমামগঞ্জে জিতেন্দ্র পাসোয়ান, সুশীলকুমার সিংহ কুশওয়াহা প্রার্থী হয়েছেন রামগড়ে, তারারিতে প্রার্থী কিরণ সিংহ। আগামী ১৩ নভেম্বরে বিহারে বিধানসভা উপনির্বাচন। ফলঘোষণা হবে ২৩ নভেম্বর।
নিজের রাজনৈতিক দলের সূচনা করলেও, আজও প্রশান্তকে ভোটকুশলী হিসেবেই চেনেন অধিকাংশ মানুষ। যদিও ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ নিধানসভা নির্বাচনের পরই ভোটকুশলীর পদ থেকে অবসর নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন প্রশান্ত। খাতায়কলমে বর্তমানে আর ওই কাজ তিনি করেন না বলে জানিয়েছেন প্রশান্ত। বরং নিজের দলকে বিহারে সরকারে তুলে আনতে বদ্ধপরিকর তিনি। সেই লক্ষ্যে গোটা বিহার ঘুরে ফেলেছেন তিনি। আপাতত উপনির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আগামী দিনে বিধানসভা নির্বাচনেও অংশ নিতে পারে তাঁর দল।