পটনা: দলের হর্তাকর্তা তিনিই। কিন্তু নিজে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না। এতদিনের সব জল্পনা খারিজ করে জানিয়ে দিলে ‘জন সুরাজ’ প্রধান প্রশান্ত কিশোর। বিহারে বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে পারদ তুঙ্গে। তিনি কোন কেন্দ্রে প্রার্থী হন, তা নিয়ে চলছিল জল্পনা। কিন্তু প্রশান্ত জানালেন, তিনি নির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন না। বরং দলের সংগঠন মজবুত করার কাজ করবেন। (Bihar Assembly Elections)
মঙ্গলবার রাতে রঘোপুর বিধানসভা কেন্দ্রে চঞ্চল সিংহকে প্রার্থী ঘোষণা করে ‘জন সুরাজ’। প্রশান্ত যে ভোটে দাঁড়াচ্ছেন না, তাতেই পরিষ্কার হয়ে যায় অনেকের কাছে। কারণ রঘোপুর রাষ্ট্রীয় জনতা দলের নেতা তথা বিহারের বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদবের কেন্দ্র। তেজস্বীর বিরুদ্ধে প্রশান্তকে দেখা যেতে পারে বলেই এতদিন জল্পনা ছিল। ( Bihar Assembly Polls)
শেষ পর্যন্ত বুধবার সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রশান্ত জানালেন, তিনি প্রার্থী হচ্ছেন না। তাঁর বক্তব্য, “ ‘জন সুরাজ’ ও আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, সংগঠনের কাজে মন দেব আমি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব না।” শুধু তাই নয়, ‘জন সুরাজ’কে লক্ষ্য়মাত্রাও বেঁধে দিয়েছেন প্রশান্ত। তাঁর বক্তব্য, “১৫০-এর কম আসন পাওয়ার অর্থ হার”। (Prashant Kishor)
কিন্তু দলের প্রধান, যিনি দলের প্রতিষ্ঠাতা, তিনি যদি নির্বাচনে না লড়েন, সেক্ষেত্রে বাকিদের মনোবল কি ভেঙে পড়বে না? প্রশান্তের সিদ্ধান্ত ঘিরে উঠছে এই প্রশ্ন। যদিও ‘জন সুরাজ’ সূত্রে খবর, প্রশান্তকে একটি বিধানসভা কেন্দ্রে বেঁধে রাখায় মন নেই কারও। দলের প্রধান মুখ তিনিই। তাই প্রত্যেক প্রার্থীর হয়ে যাতে প্রচারে তাঁকে দেখা যায়, তিনি যাতে দলের হয়ে জোরকদমে প্রচার চালিয়ে যেতে পারেন, তার উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
নিজে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করলেও, বিহার বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল কী হতে পারে, তা নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করে দিয়েছেন একদা ভোটকুশলী প্রশান্ত। প্রশান্ত সাফ জানিয়েছেন, বিহারে বিজেপি নেতৃত্বাধীন NDA জোটের হার অবশ্যাম্ভাবী। ২৫টি আসন পেতেও নীতিশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দলকে বেগ পেতে হবে বলে মত তাঁর। প্রশান্ত বলেন, “NDA-এর প্রস্থান ঘটতে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে নীতীশ কুমারের প্রত্যাবর্তন ঘটবে না আর।”
নীতিশ এবং JD (U)-এর পরিণতি নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করছেন প্রশান্ত। তাই বলে I.N.D.I.A শিবিরের উৎফুল্ল হওয়ার কোনও কারণ নেই বলেও মনে করছেন তিনি। তাঁর মতে RJD এবং কংগ্রেসের মধ্যে সংঘাত এখনও পুরোপুরি কাটেনি। মুকেশ সাহানির ‘বিকাশশীল ইনসান পার্টি’ জোটে থাকবেন কি না, তা নিয়েও সন্দিহান প্রশান্ত।
আগামী ৬ ও ১১ নভেম্বর, দুই দফায় বিধানসভা নির্বাচন বিহারে। ফলাফল ঘোষণা ১৪ নভেম্বর। বিহারের এই নির্বাচন গোটা দেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ভোটার তালিকায় নিবিড় সংশোধনে লক্ষ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়ার পর এই প্রথম নির্বাচন হচ্ছে সেখানে। ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া নিয়ে বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনের মধ্যে আঁতাতের অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। তাই ফলাফল কোন দিকে যায়, সেই দিকে তাকিয়ে সকলে।