নয়াদিল্লি: নারীদিবসে যুগান্তকারী পরিবর্তন ফ্রান্সে। দেশের সংবিধানে যুক্ত হল গর্ভপাতের অধিকার। দেশের মহিলা নাগরিকদের গর্ভপাতের অধিকার সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করল প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল মাকরেঁর সরকার। এর ফলে, গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকারে সিলমোহর দেওয়া প্রথম দেশ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় জায়গা করে নিল ফ্রান্স। (Right to Abortion)


মহিলাদের গর্ভপাতের অধিকারে সিলমোহর দেওযার নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে মাকরেঁর। শুধু ফ্রান্সই নয়, গোটা ইউরোপের মহিলাদের গর্ভপাতের অধিকারের সপক্ষে সরব তিনি। যে কারণে চলতি সপ্তাহের শুরুতেই দেশের সংবিধানে সংশোধন ঘটানোয় অনুমোদন দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত শুক্রবার তাতে সিলমোহর পড়ে। (Abortion Rights in France)


শুক্রবার নারীদিবসে গর্ভপাতের অধিকার সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর মাকরঁ জানান,  গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মহিলাদের গর্ভপাতের অধিকারপ্রাপ্তির পক্ষে তিনি। গর্ভপাতের অধিকার মহিলাদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। এর জন্য যতদূর যেতে হয় যাবেন তিনি। মাকরেঁর কথায়, “আজই গল্প শেষ হয়ে গেল না। নতুন লড়াইয়ের সূচনা ঘটল। গোটা উপমহাদেশে এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দেব আমরা, যেখানে মহিলাদের অধিকার প্রতিনিয়ত খর্ব হয়ে চলেছে।”


আরও পড়ুন: Pakistan Blasphemy Case: হোয়াটসঅ্যাপে ইসলামের অবমাননা! পড়ুয়াকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা শোনাল পাকিস্তানের আদালত


১৯৭৫ সাল থেকেই যদিও ফ্রান্সে গর্ভপাত আইনত স্বীকৃত। কিন্তু গত বছর মাকরঁ জানান, শুধুমাত্র গর্ভপাতের অধিকারই নন, অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেও রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা পাবেন মহিলারা। এই লক্ষ্যে পৌঁছতে সংবিধানব সংশোধনেও পিছপা হবেন না বলে জানান। গত সোমবার বিষয়টি নিয়ে দেশের পার্লামেন্টে ভোটাভুটি হয়, তাতে দুই কক্ষের চরফেই অনুমোদন মেলে। এর পর, সংবিধানের ৩৪ ধারা অনুযায়ী গর্ভপাতকেও ‘নিশ্চিত স্বাধীনতা’র অন্তর্ভুক্ত করা হয়।


এমনিতে অনেক দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও, গর্ভপাত নিয়ে আমেরিকার রাজনীতি দ্বিধাবিভক্ত। মহিলাদের নিজের শরীর এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ অধিকার বলে সওয়াল করেন একপক্ষ, অন্য পক্ষ আবার ভ্রূণহত্যার বিরোধী। সেই নিয়ে লাগাতার দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সেই নিরিখে আমেরিকা-সহ তাবড় উন্নত দেশকে ছাপিয়ে গেল ফ্রান্স। গর্ভপাতের অধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়াই নয় শুধু, অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রেও সরকারি সুরক্ষার আওতায় আনা হল মহিলাদের।


যদিও মাকরেঁর এই সিদ্ধান্ত নিয়েও বিতর্ক রয়েছে। দেশের নাগরিকদের ৮৫ শতাংশ যদিও এই সিদ্ধান্তের পক্ষে। তবে মাকরেঁর সমালোচকদের মতে, ফ্রান্সে গর্ভপাত আগে থেকেই আইনত স্বীকৃত। তাই সংবিধান সংশোধন করার প্রয়োজন ছিল না। নিজের রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে এবং উদারপন্থী ভাবমূর্তি গড়ে তুলতেই আগ বাড়িয়ে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মাকরঁ, অভিযোগ তাঁর সমালোচকদের।