নয়াদিল্লি: ভবিষ্যতে একজন বড় সাইকেল চ্যাম্পিয়ন হতে চায় রিয়াজ। কিন্তু চাইলেই তো আর হল না। অত্যন্ত গরিব বাড়ির ছেলে সে। পরিবারের সামর্থ্য নেই ছেলেকে একটা রেসিং সাইকেল কিনে দেওয়ার। স্বপ্নপূরণ করতে তাই নিজেই নেমে পড়ে রিয়াজ। এঁটো বাসন-পত্র মাজার কাজ শুরু করে একটি ধাবায়। বাকি সময় প্র্যাকটিস। কাজ করে পাওয়া টাকা সে জমাতে থাকে নিজের সাইকেল কেনার জন্য। আপাতত অন্য একজনের থেকে সাইকেল ধার করে প্র্যাকটিস চালাচ্ছিল রিয়াজ। অপেক্ষা করছিল কবে নিজের একটা সাইকেল হবে। অবশেষে ইদে তার স্বপ্নপূরণ ঘটল। মিডিয়া রিপোর্টে রিয়াজের খবর জানতে পেরে তাকে সাহায্য করেত এগিয়ে এলেন স্বয়ং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। উপহার হিসেবে তার হাতে একটি সাইকেল তুলে দিলেন তিনি।


রিয়াজকে সাইকেল উপহার দেওয়ার সময়ে রাষ্ট্রপতির স্ত্রী সবিতা কোবিন্দও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনিও রিয়াজকে উৎসাহ দেন। রিয়াজকে আশীর্বাদ করে রাষ্ট্রপতি কোবিন্দ বলেন, কঠিন পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে নিজেকে গড়ে তোল। তোমার দেখা স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দাও। আন্তর্জাতিক আঙিনায় চ্যাম্পিয়ন হও।

দিল্লির আনন্দ বিহারে সর্বোদয় বাল বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণির পড়ুয়া রিয়াজ। বিহারের মধুবনী জেলায় বড় হয়েছে। দিল্লিতে গাজিয়াবাদের মহারাজপুরে এক বস্তিতে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকে। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দুই বোন ও এর ভাইকে নিয়ে মধুবনীতে থাকেন রিয়াজের বাবা-মা। আর রিয়াজ গাজিয়াবাদের মহারাজপুরে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকে। একটি ধাবায় অস্থায়ী কাজ করে বাসন মাজার। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে দিল্লির সারা-রাজ্য সাইকেল প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিল রিয়াজ। গুয়াহাটিতেও একটি পুরস্কার জেতে সে। এছাড়াও আরও বেশ কিছু ছোট-মাঝারি সাইকেল রেসিং পুরস্কার নিজের ঝুলিতে ভরে নিয়েছে সে। আর তা থেকেই নিজের সম্ভাবনা সম্পর্কে আরও সচেতন হয়েছে সে, হয়েছে আত্মপ্রত্যয়ী। রিয়াজ তার কোচ প্রমোদ শর্মার কাছে রোজ ঘড়ি ধরে, নিয়ম করে প্রশিক্ষণ নেয়। কোচ তাকে দিল্লির ইন্দিরা গাঁধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রশিক্ষণ দেন। প্র্যাকটিসে আসতে কোনও কামাই বা লেট নেই রিয়াজের। যে হাতে সাইকেলের হাতল ধরে একদিন সেই হাতেই চ্যাম্পিয়নের কাপ উঠবে,এই স্বপ্নেই তো হাতে এঁটো বাসন মেজে ফেলে নবম শ্রেণির পড়ুয়া!