দিল্লি : ভারতে অবিলম্বে করোনার ওষুধের সঙ্গে ভ্যাকসিন রফতানি করতে হবে। করোনা পরিস্থিতিতে ভারতকে সাহায্যের দাবি জানিয়েছে ইউএস চেম্বারস অফ কমার্স। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনায় আক্রান্ত ৩,৪৬,৭৮৬। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে কার্যত জেরবার ভারত। এমন পরিস্থিতিতে ভারতে অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকাসহ চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামগ্রী প্রয়োজন। ইউএস চেম্বারস অফ কমার্সসহ বিভিন্ন মহল থেকেই চাপ এসেছে বাইডেন প্রশাসনের ওপর। ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্য টিকার ঘাটতি নিয়ে অভিযোগ করেছে। এদিকে আমেরিকার তরফে সাফ জানানো হয়েছে, দেশের সবাইকে টিকা দিয়ে তবেই ভারতে টিকার কাঁচামাল রফতানি করবে তারা। আর আমেরিকার এই সিদ্ধান্তই চিন্তায় ফেলেছে ভারতকে।


ইউএস চেম্বার অফ কমার্সের কার্যনির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইরন ব্রিলিয়ান্ট জানিয়েছেন, কোভিড পরিস্থিতিতে বিশ্বের কয়েকটি দেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। এই পরিস্থিতিতে ভারত, ব্রাজিলের মতো দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ডোজ এবং অন্যান্য জীবনদায়ী ওষুধ রফতানির ব্যবস্থা করতে প্রশাসনকে অনুরোধ করছে মার্কিন চেম্বার অফ কমার্স।


প্রত্যেক আমেরিকানকে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্যে যে সংখ্যক ভ্যাকসিন প্রয়োজন তা জুনের প্রথম দিকেই উৎপাদন সম্ভব হবে বলে আশাবাদী মার্কিন চেম্বার অফ কমার্স। কাজেই আমেরিকাবাসীকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরও অতিরিক্ত ভ্যাকসিন ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলিতে পাঠানো সম্ভব হবে বলে জানানো হয়েছে।


বিশ্বব্যাপী সহায়তা চেয়ে সম্প্রতি একটি বিবৃতি জারি করে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এরপরই মার্কিন চেম্বারস অফ কমার্সের তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, কঠিন এই পরিস্থিতিতে রফতানি নিশ্চিতের চেষ্টা করা হবে।


টিকার কাঁচামাল রফতানির উপর থেকে বিধিনিষেধ তুলে নিতে বারবার বাইডেন সরকারের কাছে আবেদন করেছে ভারত। তবে আগে দেশের সবাইকে টিকা দিয়ে তবেই কাঁচামাল রফতানি হবে বলে জানিয়েছিল আমেরিকা। এই প্রসঙ্গে আমেরিকার স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস জানিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে আমেরিকাবাসীকে টিকা দেওয়ার কাজ চলছে। আগামী ৪ জুলাইয়ের মধ্যে আমেরিকার প্রত্যেককে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তাই দেশের মানুষের কথা ভেবেই টিকার কাঁচামাল রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।


একটি সাংবাদিক বৈঠকে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সহ মুখপাত্র জলিনা পোর্টার জানিয়েছেন, আমেরিকা প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহের ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে কাজ করেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন দ্রুত ভ্যাকসিন উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবেন। পাশাপাশি ভারতে করোনা পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ তৈরি করেছে বলেই মন্তব্য জলিনার।


উল্লেখ্য, ডেমোক্রেটিক পার্টির কর্মী এবং জো বাইডেনের নির্বাচনী প্রচার অভিযানের ফান্ডরাইজার শেখর নরসিমহান মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিপর্যয়ের মুখে ভারত। আমাদের কিছু করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বেশিরভাগ ভারতীয়ের কেউ না কেউ মারা যাচ্ছেন। আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বিডেনের কাছে তাঁর আর্জি, "দয়া করে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলুন এবং দেখুন আমরা আগামীকালের মধ্যে অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের অন্তত ১০ এম ডোজ ভারতে পাঠাতে পারি কি না।"


অন্যদিকে টুইটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের সদস্য রাশিদা তালিব।