নয়াদিল্লি: শিশুসাহিত্যে অনন্য়সৃষ্টির জন্য '(কেন্দ্র) সাহিত্য অকাদেমি বাল সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩' পেলেন প্রিয়া এএস। ২০১৮ সালে মলয়ালি ভাষায় 'Perumazhayathe Kunjithalukal' উপন্যাসটি লিখেছিলেন তিনি। তার জন্য ২০২০ সালেই শিশুসাহিত্যে কেরল সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান। এবার পেলেন '(কেন্দ্র) সাহিত্য অকাদেমি বাল সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩'। 


২০১৮ সালের ১ নম্ভেম্বর একটি ডিজিটাল সংবাদমাধ্যমের পোর্টালের শিশুসাহিত্য বিভাগে প্রিয়ার উপন্যাসটি ধারাবাহিক আকারে বেরোতে শুরু করে। ২০১৮ সালের কেরল বন্যার প্রেক্ষাপটে বোনা হয়েছে উপন্যাসের কাহিনী। এক সাক্ষাৎকারে প্রিয়া জানান, বন্যার সময় কেরলের নদীগুলির গতিপথ যেমন বদলে গিয়েছিল, বন্যার পর মস্তিষ্কে বোমা তাঁর কাহিনীর গতিপথও বদলে যায়। বন্যা ছাড়া অন্য কিছুকে প্রেক্ষাপট বেছে নেওয়ার কথা ভাবতে পারেননি তিনি। ত্রাণশিবিরে যা চাক্ষুষ করেছিলেন, তা-ই বইটি লেখার ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা হয়ে ওঠে বলে জানান। 


'(কেন্দ্র) সাহিত্য অকাদেমি বাল সাহিত্য পুরস্কার ২০২৩' বিজয়ী নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং নাম খোদাই করা তামার একটি ফলক পান। পুরস্কার বিজয়ীকে বেছে নেওয়ার জন্য রয়েছে বিশেষ প্যানেল। সব ভাষায় লেখা বইয়ে সুপারিশ আসে। এবার এমন ১০টি বইয়ের সুপারিশ আসে পুরস্কাররে জন্য। প্রত্যেক ভাষার জন্য প্যানেলে তিন জন করে জ্যুরি সদস্য থাকেন। তাঁরাই শিশুসাহিত্য বিভাগে সেরা উপন্যাসের জন্য প্রিয়াকে বিজয়ী ঘোষণা করেন।


তবে এই প্রথম নয়, এর আগ ২০১৪ সালে '(কেন্দ্র) সাহিত্য অকাদেমি অনুবাদ সাহিত্য পুরস্কার' পেয়েছিলেন প্রিয়া। সেবার অরুন্ধতী রায়ের বুজার জয়ী উপন্যাস 'গড অফ স্মল থিংস'-কে মলয়ালি ভাষায় অনুবাদ করেছিলেন তিনি।  কোচি ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (Cusat)-এ সেকশন অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন ৫৬ বছর বয়সি প্রিয়া। বর্তমানে অবসর নিয়েছেন।  সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, "২০১৮ সালে কেরলের বন্যাকে প্রেক্ষাপট করেই উপন্যাসটি লিখেছি। সেই সময় কোচির ক্যাম্পাসের ত্রাণ শিবিরে কাজ করেছিলাম। আর সেখানেই প্রথম লক্ষ্য করেছিলাম, ভয়ঙ্কর সেই প্রাকৃতিক বিপর্যয় নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে উঠে আসা শিশুদের।"


১৯৬৭ সালে কেরলের আলাপুঝার ইরামাল্লুরে জন্ম প্রিয়ার। কোচির মহারাজা'স কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক হন। পরে বেসরকারি মাধ্যমে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা সারেন। ইরামাল্লুরে পৈতৃক বাড়িতেই থাকেন প্রিয়া। মা-বাবা এবং ছেলে তন্ময়কে নিয়ে সংসার তাঁর। শুধুমাত্র উপন্যাস লেখা বা অনুবাদের কাজ নয়, ছোট গল্প, স্মৃতিকথাও লিখেছেন প্রিয়া। এই নিয়ে তৃতীয় বার সাহিত্য অকাদেমি পেলেন।