নয়াদিল্লি: দেশকে বাঁচাতে গিয়ে শহিদ হয়েছিলেন স্বামী। স্বামীর মরদেহের সামনেই শপথ নিয়েছিলেন স্বপ্ন পূরণের। প্রায় আড়াই বছর সেই স্বপ্ন পূরণের করলেন নিকিতা কৌল। পুলওয়ামায় হামলায় শহিদ সেনা বিভূতি শঙ্কর ধৌন্দিয়ালের স্ত্রী তিনি। আজ, শনিবার ভারতীয় সেনা বাহিনীতে যোগ দিলেন নিকিতা। এদিন চেন্নাইয়ে অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমিতে আনুষ্ঠানিকভাবে লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াই কে যোশির নেতৃত্বে সেনা বাহিনীতে যোগ দেন তিনি।
সামনে কফিনবন্দি দেহ। অঝোরে কেঁদে চলেছেন সবাই। সেই দেহের সামনেই ঠায় দাঁড়িয়ে তরুণী। ততক্ষণে পাল্টে গিয়েছে জীবনের সমীকরণ। বদলে গিয়েছে পাওয়া না পাওয়ার হিসেব নিকেশ। স্বামীকে সম্মান জানাতে মাঝে মধ্যে স্লোগান দিচ্ছেন জয় হিন্দ। কখনও আবার ভেঙে পড়ছেন কান্নায়। কফিনের সামনে স্বামীর কানে কানে বললেন আমি তোমাকে ভালবাসি। প্রায় আড়াই বছর আগের পুলওয়ামা হামলার স্মৃতি এখনও টাটকা। আর স্বামীর আত্মবলিদানের পর স্ত্রীর সম্মান জানানোর ঘটনাও উজ্জ্বল। স্বামীর পথ অনুসরণ করে তরুণী স্থির করে নিয়েছিলেন সেনা বাহিনীতেই যোগ দেবেন। প্রায় আড়াই বছর পর সেই প্রতিজ্ঞা পূরণ করলেন নিকিতা।
আজ, শনিবার কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের উধমপুরের জনসংযোগ আধিকারিক এই অনুষ্ঠানের ভিডিও প্রকাশ করেন। ভিডিও পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, মেজর বিভূতি শঙ্কর ধৌন্দিয়াল নিজের জীবন দিয়েছিলেন ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামালায়। আজ তাঁর স্ত্রী নিকিতা কৌল এই ত্যাগকে সম্মান জানিয়ে ভারতীয় সেনা বাহিনীতে যোগ দিলেন। এটা অত্যন্ত গর্বের একটা মুহূর্ত। লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াই কে যোশি তাঁর কাঁধে তারা পরিয়ে দেন।
২০১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারির রাত। জঙ্গি হামলায় শহিদ হয়েছিলেন ৪০ জন সেনা। সেই তালিকায় ছিলেন বিভূতি শঙ্করও। জঙ্গিদের গুলিতে ক্ষত বিক্ষত হয়ে যায় দেহ। ২০১৮ সালের মে মাসে বিয়ে হয় বিভূতি এবং নিকিতার। এক হয় চার হাত। বিয়ের মাত্র ৯ মাসের মধ্যে ওলট পালট হয়ে যায় সবটা। কফিনবন্দি স্বামীর সামনে দাঁড়িয়ে নতুন লড়াইয়ের শপথ নেন নিকিতা। চাকরি ছেড়ে দিয়ে শুরু করেন সেনা বাহিনীতে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি। ২০২০ সালে শর্ট সার্ভিস কমিশন বা এসএসসি এবং তার পর সার্ভিসেস সিলেকশন বোর্ড ইন্টারভিউ-এ উত্তীর্ণ হন তিনি। চেন্নাইয়ের অফিসার্স ট্রেনিং অ্যাকাডেমি থেকে প্রশিক্ষণও নেন নিকিতা। শনিবার লেফটেন্যান্ট হয়ে ভারতীয় সেনায় যোগ দিলেন তিনি।