নয়াদিল্লি: স্ত্রীকে ডিভোর্স না করে অন্য কোনও মহিলার সঙ্গে 'সম্ভোগপূর্ণ এবং ব্যভিচারী সম্পর্কে' থাকলে তা 'লিভ-ইন' (Live In Relationship) বা 'বিয়ের মতো সম্পর্ক' (Relationship In The Nature Of Marriage) বলে গ্রাহ্য হবে না, মঙ্গলবার এক মামলার রায় দিতে গিয়ে জানাল পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট (Punjab And Haryana High Court Verdict)। পঞ্জাবের এক যুগল জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন। সেই আবেদন খারিজ করে এদিন এই রায় দেয় বিচারপতি কুলদীপ তিওয়ারির সিঙ্গল বেঞ্চ। 


মামলার খুঁটিনাটি...
আবেদনকারীরা আদালতে জানিয়েছিলেন, তাঁরা লিভ-ইন সম্পর্কে থাকায় তীব্র আক্রোশের শিকার হচ্ছেন। এর জন্য ওই যুগল, এক মহিলার দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। আবেদনকারীদের একজনের  স্ত্রী তিনি। অভিযোগ, স্ত্রীকে ছেড়ে স্বামী অন্য মহিলার সঙ্গে থাকায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ স্ত্রীর পরিবার। তাঁরা ওই দুই দু'জনের খুনের হুমকি দিচ্ছেন। সওয়াল চলাকালীনই আদালতে পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, অভিযোগকারী পুরুষ এখনও বিবাহিত। স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির জন্য তাঁকে ডিভোর্স না করেই অন্য একজনের সঙ্গে থাকছেন। আরও জানা যায়, 'লিভ-ইন সম্পর্কে' থাকা ওই ব্যক্তির ২ সন্তান রয়েছে। তারা মায়ের সঙ্গে থাকে। যদিও ওই ব্যক্তি এখন যাঁর সঙ্গে থাকছেন, তিনি অবিবাহিতা।


রায়...
পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট রায়ে জানিয়েছে, 'আগের স্ত্রীর থেকে ডিভোর্সের বৈধ ডিক্রি না নিয়ে ও বিয়ের সম্পর্ক রেখেই দ্বিতীয় আবেদনকারী (লিভ-ইন সম্পর্কে থাকা পুরুষ) প্রথম আবেদনকারীর সঙ্গে সম্ভোগপূর্ণ এবং ব্যভিচারী সম্পর্কে থাকতে শুরু করেন। এটি ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৪/৪৯৫ নম্বর ধারায় দণ্ডনীয় অপরাধ হতে পারে কারণ এই ধরনের সম্পর্ক লিভ-ইন বা বিয়ের মতো সম্পর্কের মধ্যে পড়ে না।' একই সঙ্গে কোর্ট আরও জানায়. আবেদনকারীদের অভিযোগ অত্যন্ত অস্পষ্ট। কোর্ট জানায়, 'আবেদনকারীরা তাঁদের অভিযোগের সমর্থনে কোনও তথ্য়প্রমাণ জমা দেননি। এমন কোনও একটিও ঘটনা ঘটেনি যা থেকে তাঁদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ হয়।'বিচারপতি কুলদীপ তিওয়ারির সিঙ্গল বেঞ্চ আরও জানায়. ব্যভিচারের অভিযোগে ফৌজদারি মামলা এড়াতে এই মামলা করা হয়েছিল। এর পরই আবেদন খারিজের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, এমন সময়ই এই রায়ের কথা সামনে এল যখন সংসদীয় কমিটির তরফে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দেশে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে ফের অপরাধ বলে গণ্য করার সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের দাবি, বিবাহ একটি পবিত্র প্রতিষ্ঠান। যেনতেন প্রকারে তাকে রক্ষা করতে হবে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় তাই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ককে ফের অপরাধ গণ্য করার আর্জি জানানো হল।  


আরও পড়ুন:প্রয়াত সাহারাকর্তা সুব্রত রায়, ৭৫ বছর বয়সে মৃত্যু