কমলকৃষ্ণ দে, বর্ধমান : বর্ধমানে রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী রাস্তা বি সি রোডকে যানজটমুক্ত করতে উদ্যোগী হল পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ ও প্রশাসন। বর্ধমান শহরের বি সি রোডে ইতিমধ্যেই যানবাহন রাখা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই রাস্তার যত্রতত্র বাইক, সাইকেল রাখা আর জবর-দখল করতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করেছে প্রশাসন। 


বিজয় চাঁদ রোড। সংক্ষেপে বি সি রোড। বর্ধমানের মহারাজা বিজয় চাঁদের নামেই রাস্তার নামকরণ। বর্ধমান রাজবাড়ির সামনে সোনাপট্টিতে রয়েছে সুদৃশ্য ঘড়ি। সেই ঘড়ির সামনে থেকে কার্জন গেট পর্যন্ত রাস্তাই বি সি রোড নামে পরিচিত। রাজ আমলের সেই ঐতিহ্যবাহী রাস্তার হাল ফেরাতে উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। বেশ কয়েক মাস আগেই এই রাস্তায় কার্জনগেট থেকে রানিগঞ্জ মোড় পর্যন্ত দু'চাকা, চারচাকা গাড়ি পার্কিং, টোটো চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।


বাইক, সাইকেল রাস্তার উপর রেখে বাজার-হাট আটকাতে সর্বক্ষণ ট্র্যাফিক পুলিশ, সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছিল। বিকল্প হিসাবে প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরি করা হয়েছে ম্যান্ডেলা পার্কে ভূগর্ভস্থ পার্কিং। কিন্তু, ধারাবাহিকতার অভাবে ফের রাস্তার দুই পাশে পার্কিং শুরু হয়। তা আটকাতে ফের অভিযান শুরু করেছে জেলা পুলিশের ট্র্যাফিক বিভাগ।


সাধারণ মানুষের অভিযোগ, ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দোকানের বাইরে ফুটপাথে পসরা সাজাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। তার ওপর ফুটপাথ দখল করে রয়েছেন হকাররা। তাতে ফুটপাথ দিয়ে হাঁটা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার উপর রাস্তাতেই সাইকেল, বাইক রেখে দোকানপাট করতে যাওয়ায় দমবন্ধ অবস্থা বি সি রোডের। বিশাল চওড়া রাস্তা পরিণত হয়ে যায় গলির রাস্তার মতো।


পুলিশ প্রশাসনের আধিকারিকরা বলছেন, বি সি রোড অনেকটা যানমুক্ত হয়েছে। নতুন করে আর জবর-দখল করা যাবে না বলে সবাইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। দোকানের পণ্যসামগ্রীও বাইরে রাখা যাবে না। 


যদিও প্রশাসনের তৎপরতায় ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, শুধু একটুখানি নয়, বি সি রোডকে যানজটমুক্ত করতে গেলে সমগ্র রাস্তাটাই করতে হবে। শুধু কার্জন গেট সংলগ্ন বি সি রোড নয়, প্রশাসন রাজবাড়ি পর্যন্ত পুরো রাস্তাই জবরদখল মুক্ত করুক। 


এ ব্যাপারে তৃণমূল সমর্থিত হকার ইউনিয়নের বক্তব্য, রাজ ঐতিহ্যবাহী এই রাস্তা জবরদখল মুক্ত হোক আমরাও চাই। এ ব্যাপারে প্রশাসনকে সবরকম সহযোগিতা করা হবে।