নয়াদিল্লি : রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির অভিযোগ ঘিরে সরগরম জাতীয় রাজনীতি। স্মৃতির অভিযোগ, অনাস্থা প্রস্তাব ইস্যুতে বক্তব্য রাখার পর কংগ্রেস সাংসদ সংসদ থেকে বেরনোর সময় ফ্লাইং কিস ছুড়েছেন। তাঁর বক্তব্য, 'একজন নারীবিদ্বেষী মানুষই কেবল সংসদে এভাবে ফ্লাইং কিস দিতে পারেন, যেখানে মহিলা সাংসদরা রয়েছেন।' যদিও বিজেপি নেত্রীর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। তাদের পাল্টা দাবি, ট্রেজারি বেঞ্চের উদ্দেশে সাধারণ অঙ্গভঙ্গি করেছেন রাহুল। নির্দিষ্ট কোনও মন্ত্রী বা সাংসদকে লক্ষ্য করে নয়।


লোকসভায় আজ অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে দ্বিতীয় দিনের বিতর্কে বক্তব্য রাখেন ওয়েনাড়ের সাংসদ রাহুল গাঁধী। কেন্দ্রীয় সরকারকে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ করে রাহুল বলেন, "মণিপুরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। সরকারের রাজনীতি ভারতকে সেরাজ্যে হত্যা করেছে। আপনি ভারতমাতার রক্ষক নন, তাঁর খুনি।" আগাগোড়া বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ান, নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রীকেও। তাঁর পরই বিজেপির তরফে বক্তব্য রাখতে ওঠেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। বক্তব্য রাখতে উঠেই তিনি রাহুল গাঁধীর নাম না করে অভিযোগ করেন, 'কিছু বিষয়ে আমার আপত্তি আছে। আমার আগে যাকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তিনি সংসদ ছাড়ার আগে অশালীন ব্যবহার করেছেন। একজন নারীবিদ্বেষী মানুষই সংসদে এভাবে ফ্লাইং কিস ছুড়তে পারেন, যেখানে মহিলা সাংসদরা রয়েছেন। তিনি কোন পরিবার থেকে এসেছেন, তাঁর পরিবার এবং দল মহিলাদের সম্বন্ধে কী অনুভব করেন তা বুঝিয়ে দিচ্ছে।' শুধু তা-ই নয়, মহিলাদের অপমানের অভিযোগ তুলে লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে অভিযোগও জানান বিজেপির মহিলা সাংসদরা। তাঁরা রাহুলের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপের দাবি জানান। 


যদিও একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এক কংগ্রেস নেতা বলেছেন, "ট্রেজারি বেঞ্চে যাঁরা ছিলেন তাঁদের ভাই-বোন সম্বোধন করে ফ্লাইং কিস দিয়ে বেরোচ্ছিলেন রাহুল গাঁধী। উনি নির্দিষ্ট কোনও মন্ত্রী বা সাংসদকে উদ্দেশ্য করেননি। কেন্দ্রীয়মন্ত্রী স্মৃতি ইরানিকে তো আদৌ নয়।"


দিনকয়েক আগেই সংসদে প্রত্যাবর্তন হয়েছে রাহুলের। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে কর্ণাটকের (Karnataka) কোলারে জনসভায় বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করতে গিয়ে 'মোদি পদবি' নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন রাহুল। বলেছিলেন, 'সব চোরের পদবি কেন মোদি হয় ?' তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে জাতীয় রাজনীতিতে জলঘোলা শুরু হয়। এনিয়ে মামলাও হয়। যে মামলার রায়ে কংগ্রেস নেতাকে দুই বছর কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। তার জেরে মার্চ মাসে সাংসদ পদ খোয়াতে হয়েছিল রাহুলকে। সেই 'মোদি পদবি' (Modi Surname) বিতর্ক মামলাতেই দিনকয়েক আগে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) সুরাট আদালতের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেওয়ায় প্রথমে সাংসদ পদ, পরে সরকারি বাংলো ফিরে পান রাহুল।