কলকাতা: রেল-প্রতারণা মামলায় বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের গ্রেফতারিতে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি বলেন, ‘জানুয়ারিতে অভিযোগ দায়ের, এতদিন কী করছিল পুলিশ?’ পুলিশের ভূমিকায় প্রশ্ন তোলে হাইকোর্ট। আগামী শুনানি ২ সেপ্টেম্বর।
গত সপ্তাহে মুকুল রায়-সহ ৪ বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এবার ৭০ লক্ষ টাকার প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের হয়।  ইতিমধ্যেই গ্রেফতার বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বাবান ঘোষ। একই এফআইআর-এ নাম ছিল বিজেপি নেতা মুকুল রায়েরও। এরপরই হাইকোর্টে আগাম জামিনের আবেদন করেন তিনি। বলেন, মমতা আমাকে ভয় পাচ্ছে। আগে ২৮টা কেস দিয়েছে। এটা নিয়ে ২৯টা হল। আইনি লড়াই লড়ব। ২০১৫-১৬ র কেস এখন দেওয়া হচ্ছে। আসলে ও ঘাবড়ে গিয়েছে।
সূত্রের খবর, এই বাবান ঘোষের হাত ধরেই টালিগঞ্জের স্টুডিওপাড়ায় প্রবেশ করেছে বিজেপি। যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে এহেন বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁর নাম, সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়। পেশায় ব্যবসায়ী এই বাক্তি বেহালার সরশুনার বাসিন্দা।
তাঁর অভিযোগ, জোনাল রেলওয়ে ইউজার কনসালটেটিভ কমিটি-র সদস্য করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে  প্রায় ৭০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৬-র মে মাসের মধ্যে কয়েক ধাপে এই টাকা নেওয়া হয়। সন্তু বলেন, বাবান ঘোষের সঙ্গে পরিচয় মুকুল রায়ের নিজাম প্যালেসের অফিসে। একাধিকবার দিল্লি গিয়েছি। রেলমন্ত্রেকও যাই। তখন রেলমন্ত্রী ছিলেন সুরেশ প্রভু। তার আপ্ত সহায়কের সঙ্গেও কথা হয়। বলল বড় অঙ্কের টাকা লাগবে। তিনিও টাকা চান। ধাপে ধাপে ৭০ লক্ষ টাকা দিয়েছি।ব্যাঙ্ক ট্রানজাকশনও করেছে কয়েকটা।
শুধু রেলের কমিটির সদস্য করাই নয়, ওই ব্যবসায়ীর দাবি, তাঁকে আরও অনেক প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। বলেন, রাপত্তারক্ষী পাবে। নীলবাতির গাড়ি পাবে, প্রতিশ্রুতি ছিল। একটা সরকারি বোর্ড দিয়েছিল। আমাকে রেলের কিছু নথিও দেওয়া হয়। পূর্ব রেলের সদর দফতরে যাই। ওরা বলে সব নকল। এরপর থেকে ওরা নিজেদের জায়গা থেকে সরে আসছিল। ফোন করলে ধরছিল না। দেখা করছিল না।
এই পরিস্থিতিতে ২৫ জানুয়ারি ওই ব্যবসায়ী সরশুনা থানায়, বিজেপি নেতা মুকুল রায়, বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি বাবান ঘোষ-সহ চারজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। তদন্তে নেমে জালিয়াতি, প্রতারণা, অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হুমকি ও দুর্নীতিদমন আইনে মামলা রুজু করে পুলিশ। সেই মামলাতেই মঙ্গলবার বাবান ঘোষকে গ্রেফতার করে পুলিশ।