মহারাষ্ট্র : জীবন বাজি রেখে ৬ বছরের শিশুর প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন। অদম্য সাহসিকতার জন্য রেলের সেই 'পয়েন্টস ম্যান'-কে ফোন করলেন খোদ রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ দেওয়া হল সংবর্ধনা।


ট্রেন ধরতে প্লাটফর্মে এসেছিলন মা ও ছেলে। হঠাৎই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেললাইনে পড়ে যায় ৬ বছরের শিশু। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুরন্ত গতিতে ট্রেন ঢুকে পড়ে প্লাটফর্মে। দৃষ্টিহীন মা বুঝতেও পারেন না কী হতে চলেছে। তখনই ত্রাতা হয়ে শিশুকে উদ্ধার করেন এক রেলকর্মী। জীবন বাজি রাখা 'পয়েন্টস ম্যান'-এর এই বীরত্বের ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।


এ  বিষয়ে প্রশ্ন করলে ময়ূর বলেন, ''ওই শিশুর সঙ্গে যে মহিলা ছিলেন, তিনি দৃষ্টিহীন। তাই তিনি কিছু করতে পারতেন না। ওই শিশুকে দেখেই রেললাইন ধরে ছুটে যাই। প্রথমে একবার ভয়ও হয়। মনে হয়, শিশুকে বাঁচাতে গিয়ে আমি বিপদে পড়ে যাব। পরক্ষণেই মনে হয়, আমার ওকে বাঁচানো উচিত। ঘটনার পর ওই মহিলা খুবই আবেগপ্রবাণ হয়ে পড়েন। বার বার আমাকে ধন্যবাদ জানান। পরে ফোন করেছিলেন রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল ''


ময়ূরের এই বীরত্বে গর্বিত তাঁর সহকর্মীরা। সেন্ট্রাল রেলওয়ে অফিসে ঢুকতেই এই সাহসী কাজের জন্য হাততালি দিয়ে ময়ূরকে অভিবাদন জানিয়েছেন স্টাফরা। ইতিমধ্যেই বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে তাঁকে। রেলকর্মীর এই কাজে গর্বিত রেলমন্ত্রকও। টুইট করেছেন খোদ রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। টুইটারে শেলকের বীরগাথা প্রকাশ করেছে রেল মন্ত্রক। ভিডিয়ো প্রকাশ করে টুইটারে রেলমন্ত্রী লিখেছেন, ''ময়ূর শেলকের কাজে আমরা খুবই গর্বিত। ভানগানি স্টেশনে নিজের জীবন বাজি রেখে শিশুকে বাঁচিয়ে ব্যতিক্রমী সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।''


গত ১৭ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টার দিকে ঘটে এই ঘটনা। মহারাষ্ট্রের ভানগানি স্টেশনের ২ নম্বর প্লাটফর্মে হঠাৎই মায়ের হাত ধরে হাঁটতে হাঁটতে প্লাটফর্মের ধারে চলে যায় শিশু। এরপরই বিপত্তি। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেললাইনে পড়ে যায় সে। মা সঙ্গীতা দৃষ্টিহীন হওয়ায় আঁচ করতে পারেননি বিপদের। তবু বুঝতে পারেন, অস্বাভাবিক কিছু একটা হয়েছে। তাই চারিদিকে আশঙ্কার রোল উঠেছে।



এদিকে রেললাইনে ওই শিশুকে পড়তে দেখেই ততক্ষণে ছুট লাগান এক রেলকর্মী। 'পয়েন্টস ম্যান'-এর দায়িত্বে থাকা ময়ূর শেলকে দেখেন, তীব্র গতিতে একই লাইনে ছুটে আসছে একটা ট্রেন। প্রথমে রেললাইন ধরে দৌড়তে থাকলেও মাঝে কিছুটা গতি কমান শেলকে। যদিও শিশুর প্লাটফর্মে ওঠার আকুতি দেখে গতি বাড়ান তিনি। নিমেষেই শিশুকে তুলে দেন প্লাটফর্মে। সঙ্গে নিজের প্রাণ বাঁচাতেও সক্ষম হন। শিশু ও রেলকর্মীর ভাইরাল ভিডিয়ো দেখে শিউরে উঠেছে সোশ্যাল মিডিয়া। একাধিক কমেন্টস এসেছে ময়ূরের সাহসিকতা নিয়ে। অনেকেই বলছেন, সবার দ্বারা এই কাজ হয় না। প্রত্যেকে স্যালুট জানিয়েছেন তাঁর এই কাজের।