জয়পুর: বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনটিকে ‘শৌর্য দিবস’ হিসেবে পালনের নির্দেশ স্কুলগুলিকে। বিতর্কের মুখে পড়ে শেষ কয়েক ঘণ্টা পর নির্দেশ প্রত্যাহার রাজস্থানের শিক্ষামন্ত্রী তথা পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রী মদন দিলাওয়ার। স্কুলগুলিতে এই মুহূর্তে পরীক্ষা চলছে, তাই নির্দেশ প্রত্যাহার বলে জানানো হল। (Babri Masjid Demolition)
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়। রাজ্যের সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি স্কুলকে ওই দিনটিকে ‘শৌর্য দিবস’ হিসেবে পালন করতে হবে বলে সম্প্রতি নির্দেশ দেয় রাজস্থানের শিক্ষা দফতর। মন্ত্রী মদনর নির্দেশানুযায়ীই সেই মর্মে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। কিন্তু বিজ্ঞপ্তি জারি হওয়ার ১২ ঘণ্টার মধ্যে, রবিবার সকালেই ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করতে হল। (Madan Dilawar)
একদিন আগে যদিও বলা হয়েছিল, বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পূর্তিতে, আগামী ৬ ডিসেম্বর সরকারি ও বেসরকারি স্কুলগুলিতে শিক্ষামূলক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে হবে, যাতে পড়ুয়া ও কর্মীদের মধ্যে ‘দেশপ্রেম, জাতীয়তাবাদ, সাহসিকতা, সাংস্কৃতিক গর্ব ও জাতীয় ঐক্যে’র প্রচার করা যায়।
তবে রবিবার সকাল সওয়া ৯টা নাগাদ ওই নির্দেশ প্রত্যাহার করেন মদন। বিবৃতি দিয়ে বলেন, ‘রাজ্যের সব স্কুলে এই মুহূর্তে পরীক্ষা চলছে। ৫ ও ৬ ডিসেম্বরও পরীক্ষা চলবে। তাই পরীক্ষা চলাকালীন স্কুলগুলিতে কোনো আয়োজন সম্ভব নয়। ফলে ‘শৌর্য দিবস’ উদযাপন স্থগিত রাখা হচ্ছে’।
বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিন ‘শৌর্য দিবস’ পালন নিয়ে গোড়াতেই বিতর্ক দেখা দেয়। যদিও মদনের যুক্তি, ‘ভগবান রামচন্দ্র ভারতীয় সংস্কৃতির আদর্শের প্রতীক, রামমন্দির আন্দোলন দেশের জাতীয় গর্বের প্রতীক’। রামজন্মভূমি আন্দোলনের কথা জানলে দেশাত্মবোধ ও জাতীয় ঐক্যবোধে উদ্বুদ্ধ হবে পড়ুয়ারা। সেই মতো ‘শৌর্য দিবস’ উদযাপনে বক্তৃতা, রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজনও করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
অযোধ্যার রামমন্দিরকে বিষয়বস্তু করে আঁকার প্রতিযোগিতার আয়োজনের নির্দেশও দেন মদন। দেশাত্মবোধক গান, লোকনৃত্য, পৌরাণিক কাহিনি অথবা ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট নির্ভর করে নাটকের আয়োজন করতে বলেছিলেন। আরও বলা হয়েছিল যে, রামজন্মভূমি আন্দোলন সম্পর্কে প্রকাশিত প্রতিবেদন, ‘সাহসী মুহূর্তে’র ছবি সহকারে প্রদর্শনী আয়োজন করতে হবে। সকালে ‘সূর্য নমস্কার’, যোগব্য়ায়াম এবং বিশেষ প্রার্থনাসভার আয়োজন করে, ভগবান রামের আরতি করতে হবে স্কুলে। স্কুল চত্বরে ‘শৌর্য মার্চ’ করতে হবে বলেও জানানো হয়। বিতর্কের জেরেই শেষ পর্যন্ত পিছু হটতে হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
এর আগেও একাধিক বার বিতর্কে জড়িয়েছেন মদন। এর আগে, মাদ্রাসা-সহ সমস্ত স্কুলে ‘বন্দে মাতরম’ গাইতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। মুঘল সম্রাট আকবরকে ‘অত্যাচারী শাসক’ বলেছিলেন।