নয়াদিল্লি: কথায় কথায় দেশপ্রেম, দেশভক্তির বুলি আওড়ালেও নেতা-মন্ত্রীদের বাড়ি থেকে কেউ সেনায় যান না বলে অভিযোগ কম নেই। সেই আবহেই বিজেপি সাংসদ তথা অভিনেতা রবি কিষাণের মেয়ের সেনায় নাম নথভুক্তিকরণের কথা জানা গেল । কেন্দ্রীয় সরকারের 'অগ্নিপথ' প্রকল্পের (Agnipath scheme)  অধীনে মেয়ে ইশিতা শুক্লা ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নাম লিখিয়েছেন বলে খবর। শীঘ্রই কাজে যোগ দেবেন তিনি (Ravi Kishan Daughter)।


রবি কিষাণের মেয়ে ইশিতার বয়স ২১ বছর। তিনি 'অগ্নিবীর' হিসেবে সেনায় যোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক দীনেশ খটিক। সেই খবরে সিলমোহর দিয়েছেন খোদ রবি কিষাণও। দীনেশের ট্যুইট রিট্যুইট করে,  হাতজোড় করে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন। দীনেশের কথায়, 'আমার বন্ধু, বিজেপি নেতা এবং গোরক্ষপুরের সাংসদ শ্রী রবি কিষাণের মেয়ে ইশিতা শুক্লা 'মহিলা অগ্নিবীর' হতে চলেছেন। তার জন্য হার্দিক অভিনন্দন।  অগ্নিপথ প্রকল্পের আওতায় সেনাবাহিনীতে যোগ দিচ্ছেন ইশিতা। দেশের যুবসমাজের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছেন উনি। ইশিতার উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রার্থনা করি'।



তবে মেয়ে যে সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে চলেছেন, গত বছরই সেকথা জানিয়েছেন রবি কিষাণ। উর্দি পরিহিত মেয়ের ছবি পোস্ট করে ট্যুইটারে লিখেছিলেন, 'আমার মেয়ে ইশিতা শুক্লা, আজ সকালেই বলল, 'বাবা, আমি অগ্নিপথ প্রকল্পের অংশ হতে চাই'। আমি বললাম, এগিয়ে যাও'। এ বছরের গোড়ায় মেয়ের প্রশিক্ষণের কিছু ছবিও প্রকাশ করেন তিনি।


আরও পড়ুন: Veer Savarkar Setu: বিধানসভা নির্বাচনের আগে নামবদলের হিড়িক, মহারাষ্ট্রে ভারসোভা-বান্দ্রা সি লিঙ্কের নাম এখন ‘বীর সাভারকর সেতু’



রবি কিষাণ জানান, বিগত তিন বছর ধরে, দিল্লি ডিরেক্টরেটে মেয়েদের সামরিক শিক্ষা বিভাগে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তাঁর মেয়ে। জানুয়ারি মাসে প্রশিক্ষণের ছবি পোস্ট করে লেখেন, 'দেশসেবা করতে তেয়ে আমার মেয়ে বিগত তিন বছর ধরে অসম্ভব পরিশ্রম করছে। দিল্লি ডিরেক্টরেটে মেয়েদের ৭ নম্বর সামরিক শিক্ষা বিভাগের ক্যাডেট। প্রচণ্ড ঠান্ডায়, কুয়াশার মধ্যে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছে'।


ইশিতা নিজেও সোশ্যল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয়। প্রশিক্ষণের একাধিক ছবি পোস্ট  করতে দেখা যায় তাঁকেও। এবারের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজের প্রস্তুতি নিয়ে ভিডিও-ও পোস্ট করেছিলেন।


সেনাবাাহিনীতে নিয়োগের নয়া প্রকল্প হিসেবে গতবছর জুন মাসে 'অগ্নিপথ'-এর ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। এর আওতায় দেশের সেনাবাহিনীতে চার বছর কাজ করার সুযোগ পাবে দেশের যুবসমাজ। ২৩ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। তবে এই প্রকল্পকে ঘিরে কম বিতর্ক হয়নি। বিশেষ করে হিন্দিবলয় তেে ওঠে এই প্রকল্পের বিরোধিতায়। মাত্র চার বছরের জন্য সেনার চাকরির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। পেনশন, ভাতা বাবদ বিপুল খরচ এড়াতেই স্বল্পমেয়াদি নিয়োগে সরকার উদ্যত হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। মাত্র ছ'মাসের প্রশিক্ষণকাল নিয়েও ওঠে প্রশ্ন। শুধু তাই নয়, দেশের যুবসমাজ, অস্ত্রচালনা শিখে, চার বছর যখন ফের বেকার অবস্থায় ফিরবে, উল্টো প্রতিক্রিয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন অনেকে। সেই নিয়ে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারিদিকে। তবে 'অগ্নিপথ' প্রকল্প নিয়ে অবস্থান পাল্টায়নি কেন্দ্র।