কলকাতা: ওয়াইফাই রয়েছে। আছে স্কুল-কলেজ। পড়াশোনার জন্য লাইব্রেরি। পরিকাঠামোও দুর্দান্ত। রাস্তা, রাস্তার পাশে আলো থেকে পরিস্রুত পানীয় জল- মিলবে সব আধুনিক পরিকাঠামো। শুনে মনে হচ্ছে- এটা নিশ্চয়ই কোনও আধুনিক শহর হবে। কিন্তু তা নয়, এই সব সুবিধাই মিলবে একটি গ্রামে এবং সেটাও এই ভারতেই।
গুজরাতের সবরকণ্ঠা (Sabarkantha) জেলায় রয়েছে এই পানসারি গ্রাম। আহমেদাবাদা থেকে অন্তত ১০০ কিলোমিটার দূরে। গুজরাতের প্রথম 'আদর্শ গ্রাম' হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে এটি। এই গ্রামে এমন এমন পরিকাঠামোগত সুবিধা পাওয়া যায় যা হয়তো দেশের অনেক জেলা শহরেও মেলে না।
এই গ্রামে রয়েছে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য পাবলিক ওয়াইফাই। রয়েছে এসি স্কুল। শুধু এই গ্রামেরই নয়, আশেপাশের গ্রামের ছেলেমেয়েরাও এখানে পড়তে আসে। গ্রামে এমন মোট পাঁচটি স্কুল রয়েছে। রয়েছে আধুনিক চিকিৎসার সুবিধাযুক্ত হাসপাতালও।
গ্রামে মোবাইল লাইব্রেরি:
গুজরাতের এই গ্রামে একটি মোবাইল লাইব্রেরি তৈরি করা রয়েছে। যাঁরা পড়তে ভালোবাসেন তাঁদের জন্য তৈরি এই লাইব্রেরি। একটি অটোতে ভ্রাম্যমাণ এই লাইব্রেরি তৈরি করা হয়েছে। নির্দিষ্ট সময় এই লাইব্রেরিটি ঠিক জায়গায় পৌঁছয়। লোকেরা সেখানে তাঁদের পছন্দের বই পড়ে।
বায়োমেট্রিক ব্যবহার করা হয়:
পানসারি গ্রাম আদতেই হাই-টেক গ্রাম। এখানে গ্রাম পঞ্চায়েতে বায়োমেট্রিক ব্যবহার করা হয়। যাতায়াতের জন্য রাস্তা, পরিশ্রুত পানীয় জল এবং বায়োগ্যাস প্লান্ট তৈরি করা হয়েছে গ্রামে।
পানসারিতে জলশোধনের জন্য RO Plant রয়েছে। গ্রামের মানুষের জন্য স্বল্পমূল্যে এই পানীয় জল দেওয়া হয়। অন্য গ্রামের জন্য আরও কিছুটা বেশি দামে সেই জল বেচা হয়। বার্ষিক লাভের পরিমাণ বেশ ভালই। তা থেকে প্ল্যান্ট দেখভাল হয়।
বজ্রনিষ্কাশনের ক্ষেত্রেও মডেল এই গ্রামটি। দুরন্ত নিকাশি ব্যবস্থা রয়েছে। বজ্র নিষ্কাশনের জন্য যন্ত্র ব্যবহার করা হয় এই গ্রামে।
কার হাতে এই বদল:
২০০৬ সালে, হিমাংশু প্যাটেল যখন এই গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান হন, তখন এখানে অনেক সমস্যা ছিল। কিন্তু তার হাত ধরেই নাকি মাত্র আট বছরে পাল্টে যায় এই গ্রাম। এখন এই গ্রামই মডেল বাকিদের কাছে। পঞ্চায়েত, গ্রামবাসীদের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে, সরকারি প্রকল্পগুলির পুরোপুরি উপযোগ ব্যবহার করেই এই সাফল্য মিলেছে বলে বারংবার জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন: জীবনজুড়ে জঙ্গল, কলমজুড়ে প্রেম! টপ্পায় বুঁদ করতেন 'ঋজুদা' বুদ্ধদেব