‘ভুলে ভরা আর নাম তোলা, বাদ দেওয়ায় বিভ্রাট হয়েছে’, তাই বর্তমান এনআরসি তালিকা অসম সরকার মেনে নিতে পারছে না বলেও জানান হিমন্ত। বলেন, যাদের নাম তালিকায় থাকার কথা নয়, তারা ঠাঁই পেয়েছে আর যাদের নাম থাকা উচিত ছিল, তারা বাদ পড়েছে। গোটা দেশের জন্য 'কাট অফ' দিন একই হওয়া উচিত, কখনও দুটো দিন থাকা উচিত নয়। যদিও সারা দেশে এনআরসির জন্য কোন দিনটা ভিত্তির দিন হিসাবে ধরা উচিত, তা স্পষ্ট করেননি হিমন্ত।
১৯৫১ সালে প্রথম এনআরসি তৈরি হয় অসমে। সেই তালিকা আপডেট করা হচ্ছে। ১৯৫১-র তালিকায় বা ১৯৭১ এর ২৪ মার্চ মাঝরাত পর্যন্ত জারি হওয়া বৈধ নথিগুলির যে কোনও একটিতে বা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত লোকজন বা তাদের বংশধরদের নাম তোলার কাজ হয়েছে। ১৯৮৫-র অসম চুক্তির ভিত্তিতে অসমে ‘বেআইনি’ অভিবাসনকারী চিহ্নিত করার কাট অফ দিন ঠিক হয়েছে ১৯৭১ এর ২৪ মার্চ।
হিমন্ত সওয়াল করেন, সারা দেশে এনআরসি না হলে অসমে তালিকা থেকে বাদ পড়া কোনও সন্দেহভাজন অবৈধ বিদেশি অনুপ্রবেশকারী অন্য কোনও রাজ্যে ঢুকে ভারতীয় নাগরিক পরিচয়ে থাকতে পারেন। অসমে এনআরসির মাধ্যমে কাউকে ‘বিদেশি’ ঘোষণা করে নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ দেওয়ার পর তিনি কলকাতায় গিয়ে ভোটার তালিকায় নাম তোলাতে পারেন। তিনি ভারতীয় নাগরিক হয়ে যাবেন। শুধু অসম নয়, গোটা ভারত থেকেই সব ‘বিদেশি’কে বহিষ্কারের কথা বলছি আমরা।
অসমে গত ৩১ আগস্ট প্রকাশিত চূড়ান্ত এনআরসি থেকে ১৯ লাখ আবেদনকারীর নাম বাদ গিয়েছে। তাঁরা বিদেশি ট্রাইব্যুনালে বাদ পড়াকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদন জানাতে পারবেন। তবে এনআরসিতে প্রত্যাখ্যানের বিরোধিতা করার প্রথম ধাপ হল এনআরসি কর্তৃপক্ষের ইস্যু করা আদেশ জোগাড় করা, যা এখনও দেওয়া হয়নি।
অসম সরকার ও রাজ্য বিজেপি চূড়ান্ত এনআরসি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে তা প্রকাশিত হওয়ার পরই। তারা কাঠগড়ায় তুলেছে এনআরসি-র প্রাক্তন রাজ্য কোঅর্ডিনেটর প্রতীক হাজেলাকে। আজ হিমন্তও হাজেলার তীব্র সমালোচনা করে অভিযোগ করেন, এনআরসি আপডেট করার গোটা প্রক্রিয়াটি চালানো হয়েছে রাজ্য সরকারকে দূরে সরিয়ে রেখে। কিন্তু সারা দেশ ভাবছে, এনআরসি তৈরি করেছে অসম সরকার। আমরা একটা লোকের জন্য ভুগছি। আমরা পুরো সিস্টেমটা নিয়েই চিন্তিত। হাজেলা যেভাবে একটা ভিন্ন ইকোসিস্টেমে প্রক্রিয়াটি চালিয়েছেন, তাতে নানা স্তরে প্রশ্ন উঠেছে। জনপ্রতিনিধি হিসাবে এখন তার উত্তর দিতে পারছি না আমরা।