আঙ্কারা: যে দিকে দু'চোখ যায়, শুধু লাশের স্তূপ (dead body scattered)। কারও দেহে যদি প্রাণের ক্ষীণ চিহ্ন থেকেও থাকে, টের পাওয়া কঠিন। কারণ একের পর এক আফটার শক (after shock), ফের কম্পন (earthquake), তুষারঝড় (blizzard), হাড় কাঁপানো ঠান্ডার (cold) মধ্যে উদ্ধারকাজ চলছে তুরস্ক (turkey) ও সিরিয়ায় (syria)। ফল? যত সময় এগোচ্ছে, ততই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুমিছিল। ভারতীয় সময় দুপুর সওয়া একটা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, তা ৪ হাজার আটশো টপকে গিয়েছে।



ধ্বংসের ছবি...
তুরস্ক-সিরিয়া সীমান্তের ছবিটা দেখলে একনজরে বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ের কথা মনে হতে পারে। হাজার হাজার আবাসন স্রেফ ইট, কাঠ, কংক্রিটের স্তূপ হয়ে পড়ে রয়েছে। এমনিতেই যুদ্ধ, সন্ত্রাসবাদী হামলা, শরণার্থী সমস্যা এবং হালে কলেরার দাপটে ওই এলাকার বাসিন্দাদের ভয়ঙ্কর অবস্থা। তার উপর ভূমিকম্প। যাঁরা কোনও মতে প্রাণ বাঁচাতে পেরেছেন, তাঁরা হাড় হিম করা ঠান্ডার মধ্যেই রাতভর ওই স্তূপ ঘেঁটে প্রিয়জনকে খুঁজেছেন। সাত বছরের এক শিশুর মুখে যেমন একটাই প্রশ্ন, 'আমার মা কোথায়?' পরনের জামা ধুলোর পুরু চাদরে ঢাকা। এখনও মায়ের খোঁজ পায়নি সে, পাবে কি? জোর দিয়ে বলার উপায় কোথায়? রিখটার স্কেলে ৭.৮ মাত্রার ভূমিকম্প ঘেঁটে দিয়েছে সব। 

কী ঘটেছিল?
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, তাপমাত্রা রাতারাতি হিমাঙ্কের কাছাকাছি নেমে গিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া বা গৃহহীনদের অবস্থা আরও খারাপ করেছে আবহাওয়া । যাঁরা খোলা আকাশের নিচে রাত কাটাচ্ছেন, তাঁদের অবস্থা আরও ভয়াবহ। ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে পড়া অনেকেই ঠান্ডার কামড়ে প্রাণ হারিয়ে থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রবল ঠান্ডায় ব্যাহত হচ্ছে উদ্ধারকাজও। মৃতের সংখ্যা কোথায় গিয়ে পৌঁছবে কেউ জানে না ! প্রবল প্রতিকূলতার মধ্যেই শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ ! চারিদিকে ধ্বংসস্তূপ আর সার সার মৃতদেহের ছবি সামনে এসেছে। তারমধ্যেই সোমবার ভোরের ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ছোট-বড় মিলিয়ে অন্তত ৫০ বার আফটার শক হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ায়। বিশেষজ্ঞদের দাবি, ১৯৩৯ সালে শেষবার এমনই ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল তুরস্কে। সেবারও রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। প্রাণ হারিয়েছিলেন ৩৩ হাজার মানুষ। কিন্তু সোমবারের বিভীষিকা যেন কেউ ভুলতে পারছেন না। মহাপ্রলয়ের পর দিনও মৃত্যুমিছিল অব্যাহত। সঙ্কটের এই মুহূর্তে তুরস্কের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। তুরস্ক যাচ্ছে NDRF-এর দুটি উদ্ধাকারী টিম, সঙ্গে ডগ স্কোয়াড। প্রচুর ওষুধ ও খাদ্য সামগ্রীও পাঠানো হচ্ছে ভারত থেকে। 


আরও পড়ুন:'দু'বছর ছিলাম না, অনেক অ্যাক্সিডেন্টাল নেতা তৈরি হয়েছে'