কলকাতা: আর জি করের ঘটনায় গর্জে উঠেছে সুশীল নাগরিক সমাজ। একে একে পথে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলি। আর তাতেই শুরু হয়ে গিয়েছে তরজা। মর্মান্তিক ঘটনাকে ঘিরে কিছু মানুষ রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি করতে চাইছেন বলে উঠছে অভিযোগ। বিষয়টি এবার উঠে এল সুপ্রিম কোর্টেও। আর জি করের ঘটনা নিয়ে কোনও  রকম রাজনীতি হওয়া উচিত নয় বলে জানালেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। (RG Kar Supreme Court Hearing)


আর জি করের জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে আদালতে একটি চিঠি জমা পড়ে, যেখানে নিরাপত্তাহীনতার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। হুমকি পাচ্ছেন, ভয় দেখানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। সেই নিয়ে CISF মোতায়েন হয়েছে কি না, জানতে চায় শীর্ষ আদালত। জবাবে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, CISF মোতায়েন হয়েছে। (Supreme Court)


আর এই প্রসঙ্গেই রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহের সাম্প্রতিক মন্তব্য আদালতে তুলে ধরেন মেহতা। তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গের এক মন্ত্রী বলছেন, তাঁদের নেত্রীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করলে আঙুল কেটে নেওয়া হবে। এর পাল্টা রাজ্যের আইনজীবী কপিল সিবল জানান, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী গুলি চলবে বলেছেন। অ্যাসিড বোমা ছোড়ার কথাও উঠছে। 


সেই নিয়ে তর্ক বাধলে এগিয়ে আসেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, "এসব নিয়েরাজনীতি করবেন না। আইন আইনের পথে চলবে। আইনি প্রক্রিয়া মেনে এগোবে মামলা।" আগামী ৫ সেপ্টেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে। তার আগে, এক সপ্তাহের মধ্যে আবারও আদালতে স্টেটাস রিপোর্ট জমা দিতে হবে সিবিআই এবং রাজ্য সরকারকে। 


যে প্রসঙ্গে এদিন আদালত আর জি কর নিয়ে রাজনীতি না করার আর্জি জানিয়েছে, তার সঙ্গে রাজ্যের দুই হেভিওয়েট রাজনীতিকের নাম জড়িয়েছে। প্রথম জন হলেন, রাজ্যের মন্ত্রী উদয়ন গুহ। আর জি কর কাণ্ডে যখন উত্তাব চারিদিক, সেই সময় সম্প্রতি উদয়নকে বলতে শোনা যায়, "এই ঘটনায় যাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে আঙুল তুলছেন, সমাজমাধ্যমে গালাগালি করছেন, পদত্যাগ চাইছেন, সেই আঙুলগুলিকে চিহ্নিত করে ভেঙে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নইলে এরা বাংলাকে বাংলাদেশ তৈরির চেষ্টা করবে।"


এর পর, বুধবার কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিল থেকে বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর বক্তব্য ছিল, "সোমবারের মধ্যে পদত্যাগ করুন। নইলে মঙ্গলবার গুলি চললে, তার দায় মমতাকে নিতে হবে।" আগামী ২৭ অগাস্ট নবান্ন অভিযান করছে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন ABVP. তার আগে মমতাকেও শেখ হাসিনার মতো পালাতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিজেপি নেতৃত্ব। আদালতে আজ সেই প্রসঙ্গই উঠে আসে।