কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডে দলের অন্দরে অন্তর্ঘাতের ইঙ্গিত মিলেছে আগেই। বিশেষ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন সক্রিয় ভূমিকায় নেই, প্রশ্ন তুলছেন তৃণমূল নেতৃত্বই। সেই আবহেই আর জি করের ঘটনা এবং দেশের সর্বত্র নারী নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে আবারও মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। ধর্ষণের ঘটনায় নিয়ে রাজ্য সরকাকে পদক্ষেপ করতে হবে বলে মন্তব্য করলেন তিনি। (Abhishek Banerjee)


বৃহস্পতিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় নারী নির্যাতনের ঘটনা নিয়ে ফের সকলের নজর কাড়েন অভিষেক। তিনি লেখেন, 'গত ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে গোটা দেশ যখন আর জি করের ঘটনায় প্রতিবাদে নেমেছে, ন্যায় বিচার চাইছেন, সেই সময়ই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৯০০ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে গিয়েছে। এই জঘন্য অপরাধের বিরুদ্ধে যখন রাস্তায় প্রতিবাদে শামিল সাধারণ মানুষ, সেই সময়ই একের পর এক ঘটনা ঘটে গিয়েছে'। (RG Kar Case)


কিন্তু এত আন্দোলন, প্রতিবাদের পরও স্থায়ী সমাধানের রাস্তা বেরোল না বলেও মন্তব্য করেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য,'দুঃখের বিষয়, স্থায়ী সমাধান বের করতে কোনও কথাই হচ্ছে না।  রোজ ৯০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে, প্রতি ঘণ্টায় চারটি এবং প্রতি ১৫ মিনিটে একটি। এমন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি। ফাঁপা প্রতিশ্রুতি নয়, ৫০ দিনের মধ্যে বিচার ও কঠোর সাজার মতো আইনের প্রয়োজন রয়েছে'।



আর জি করের ঘটনার আঁচ এখনও পর্যন্ত একটুও কমেনি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত  তো বটেই দেশের অন্যত্রও প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলছে। গত ১৪ অগাস্ট 'মেয়েদের রাত দখল' মিছিল বেরনোর পর থেকে প্রতিদিনই একাধিক মিছিল বের হচ্ছে। সেই আবহেও পশ্চিমবঙ্গ তথা দেশের অন্য রাজ্য থেকে একের পর এক ধর্ষণ, নারী নির্যাতনের ঘটনা উঠে আসছে। সেই নিয়েই এদিন সরব হলেন অভিষেক। তাঁর বক্তব্য, 'রাজ্য়ের সরকারগুলির উচিত পদক্ষেপ করা। দ্রুত ধর্ষণ বিরোধী আইন প্রণয়নে কেন্দ্রীয় সরকারকে চাপ দেওয়া হোক, যাতে দ্রুত বিচার হয়, কঠোর সাজা দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে শিথিলতা হলে নেহাতই প্রতীকী এবং অকার্যকর হয়ে রয়ে যাবে সব। জেগে ওঠো ভারত'।


তবে অভিষেকের এই মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেও মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ আর জি করের ঘটনায় রাজ্য যখন কোণঠাসা, তৃণমূলের তরফে রাস্তায় নেমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া চেষ্টা চলছে, সেখানে অভিষেককে কোথাও দেখা যায়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘটনার নিন্দা করলেও, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে মিছিলে পা মেলাননি, দলের নেতা-নেত্রীদের সঙ্গেও দেখা যায়নি তাঁকে। এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূলের অন্দর থেকেই অভিষেককে সম্মুখ ভাগে দেখতে চেয়ে দাবি ওঠে। কুণাল ঘোষ নিজে অভিষেককে সক্রিয় ভূমিকায় দেখতে চাওয়ার দাবি জানান, জেলাস্তর থেকেও সোশ্যাল মিডিয়ায় দাবি ওঠে অভিষেককে সম্মুখ ভাগে নিয়ে আসার। সেই আবহে যখন মুখ খুললেন অভিষেক, ধর্ষণ রোখার ক্ষেত্রে রাজ্যের ভূমিকার কথাই তুলে ধরলেন তিনি।